Wednesday, April 18, 2018

পল্টিবাজ রাশিয়া সম্পর্কেও সতর্ক থাকতে হবে

ইরান ২০০৭ সালে চুক্তি করে রাশিয়ান এস-৩০০ সিস্টেমের কেনার জন্য কিন্তু জাতিসংঘের নানারুপ বাধার কারনে ইরান ২০১৫ সালে প্রথম ব্যাচ এস-৩০০ এয়ার ডিফেন্স পায়। এরপরের ব্যাচ পায় ২০১৬ সালে বলে রাখা ভাল ইরান তাদের এক ব্যাচ এস-৩০০ মিসাইল সিরিয়াতে মোতায়েন করে এর কার্যকারিতা পরীক্ষা করার জন্য। কিন্ত বিধি বাম সেখানে এস-৩০০ মোতায়েনের পরও ইসরাইলী বিমানবাহিনী দামেস্কের বিভিন্ন মিলিটারি ঘাঁটিতে হামলা করে যাচ্ছে! এতে সন্দেহ বাড়ে অভিযোগ আছে রাশিয়ার কিছু অনৈতিক চক্র তার সফটওয়্যার কোড গোপনে ইসরায়েলের কাছে পাচার করেছে। ফলে সিরিয়ায় ইসরায়েলের এয়ারস্ট্রাইকের তথ্য ইরানের S300 ডিটেক্ট করতে পারেনি। তবে ধারণা করা হয় এটি ইসরাইল ও রাশিয়া চুক্তির ফলেই হয়েছে! এই ব্যাপারটা অনেক আগেই নেতানইয়াহুর রাশিয়া সফরের সময়ই ক্লিয়ার করা হয়েছিল। কারন যখন প্রতিবারই ইসরাইল হামলা করত ইরান আর সিরিয়ান স্পেসালিস্ট দের চোখ ছানা বড়া হয়ে যেত। কারন সিরিয়ান স্যামের খুব সহজেই ইসরাইলি জেট গুলোকে টেক অফের সময়ই ডিটেক্ট করতে পারার কথা যেটা সিরিয়ান বর্ডার থেকে মাত্র ৫০ কিলোমিটার দূরে। কিন্তু কোন এক অদৃশ্য কারনে প্রতিবারই সিরিয়ান এয়ার ডিফেন্সগুলো এনেমি মিসাইল বা জেটগুলোকে আইডেন্টিফাই করতে ব্যার্থ হয়। এভাবে, কয়েকবার এয়ার স্ট্রাইকের পর ইরান অত্যন্ত গোপনে তার একদল সামরিক বিশেষজ্ঞ বা স্পেশালিস্ট সিরিয়াতে পাঠিয়ে দেয় এবং তারা কয়েকটা সিরিয়ান ও নিজেদের এয়ার ডিফেন্সের সোর্স কোড পাল্টে দিতে সক্ষম হয়। এরপর যখনই ইসরাইল স্ট্রাইক করতে আসে এবার সিরিয়ান স্যামগুলো ইসরাইলি জেট গুলোকে আইডেন্টিফাই করতে সক্ষম হয় এবং তাদের ছোড়া মিসাইলগুলোকে ইন্টারসেপ্ট করে। আর ঐ এয়ার বেসটার দিকে কয়েকটা মিসাইল ও ছুঁড়ে দেয় যেগুলোকে আবার ইসরাইলি এয়ার ডিফেন্স ইন্টারসেপ্ট করে। ঠিক এর পর পরই ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানইয়াহু প্রথমবারের মত সরাসরি সিরিয়ান এয়ার ডিফেন্স ধ্বংসের হুমকি দিয়েছিলেন!

এদিকে, ইরানের সামরিক বিশেষজ্ঞরা বুঝতে পেরেছিল রাশিয়া খুব সম্ভবত ইসরাইলকে সিরিয়ান স্যামের সোর্স কোড দিয়েছে। কারণ এই কাজ রাশিয়া নতুন করে না অনেক আগে থেকেই করতো। ৮০ এর দশকে ইরাকের পরমাণু প্রকল্পে নিয়োজিত সোভিয়েত এয়ার ডিফেন্সের কোড ইসরাইলে পাচার করেছিল বলে অভিযোগ করেছিল ইরাক। তাই যখনই ইসরাইলি জেট টেকঅফ করত সিরিয়ান স্যাম জেটগুলোকে সিরিয়ান এয়ারফোর্স ভাবত। যখন ইসরাইল সিরিয়ায় স্ট্রাইক করে তা রাশিয়ান এয়ার ডিফেন্স রেন্জের বেশ ভালভাবেই ভেতরে থাকে কিন্তু রাশিয়ান এয়ার ডিফেন্সগুলো রেসপন্ড করেনা কারন এ নিয়ে ইসরাইলের সাথে আগেই গোপন চুক্তি আছে যখন রাশিয়া কোন এয়ার স্ট্রাইক করতে যায় আগেভাগেই ইসরাইলকে জানিয়ে দেয় আর যখন ইসরাইল কোন স্ট্রাইক করতে আসে তা আগে থেকেই রাশিয়াকে জানিয়ে দেয় আর শুধুমাত্র এ সংক্রান্ত খবর আদান প্রদানের জন্যই মস্কো তেলআবিব হটলাইন প্রতিষ্ঠা করা হয়।

সিরিয়ার এই ঘটনায় বুঝা যায় প্রয়োজনের সময় নিজ দেশের অস্ত্র কাজ করবে না (এখানে ইরান , ইরাক ও সিরিয়ার নয় ৮০ এর দশকে আজেন্টিনার অভিজ্ঞতা লক্ষ্যনীয়, আজেন্টিনা ও ব্রিটেনের মধ্যে ফকল্যান্ড নিয়ে ১৯৮৪ সালে যুদ্ধ বাধে আজেন্টিনার এক্সজোকেট মিসাইল হামলায় ব্রিটেনের সবচেয়ে বড় ও অত্যাধুনিক ড্রেস্ট্রয়ার ডুবে যায় ও আরও কিছু যুদ্ধ জাহাজ বিশাল ক্ষতিগ্রস্থ হয় । পরবর্তী সময়ে এক্সজোকেট মিসাইলের প্রস্তুতকারক দেশ ফ্রান্স ব্রিটেনকে তাঁদের তৈরি মিসাইলের গোপন কোড সরবরাহ করে ফলাফল পরে আজেন্টিনার একটি এক্সজোকেট মিসাইলও ব্রিটিশ জাহাজের বিরুদ্ধে কাজ করেনি ! এরপরে ১৯৯১ সালে উপসাগরীয় যুদ্ধের সময় ইরাকী এক্সজোকেট মিসাইল হামলায় মার্কিন ড্রেস্ট্রয়ারের বিপুল ক্ষতিসাধন করে ও প্রায় ৫০ জনের মত মার্কিন নেভি ও অফিসার নিহত হয় এরপরে ফ্রান্স মার্কিনীদের মিসাইলের গোপন তথ্য সরবরাহ করে ফলে একটি এক্সজোকেট মিসাইলও মার্কিনীদের যুদ্ধ জাহাজের বিরুদ্ধে কাজ করেনি !

ইউটিউবে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের চ্যানেলটি

Share This
Previous Post
Next Post

0 comments: