Wednesday, April 18, 2018

সার্বিয়াতে বসনিয়ার মুসলিম গণহত্যা

১৯৯৯ সালের সার্বিয়ার রাজধানী বেলগ্রেডে আমেরিকান বিমান হামলার নেপথ্যে। সার্বিয়াতে আমেরিকা হামলার প্রেক্ষাপট সার্বিয়া নিজেই তৈরি করেছিল। কারণ ছিল বসনিয়ার আলবেনীয় মুসলিমদের গণহত্যা করা। অনেক আগে থেকেই এর প্রেক্ষাপট রচিত হয় সার্বিয়ার আক্রমনাত্মক আচরনে! সাবেক যুগোস্লাভিয়া ভেঙ্গে কয়েকটি দেশ হলে সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ ছিল সার্বিয়া। তারা অনেকটা মায়ানমারের মুসলিম রোহিঙ্গাদের মতই রাষ্ট্রীয় মদদে তারিয়ে দেওয়ার জন্য অনেক চেষ্টা করে। এতে কাজ না হওয়ায় ২য় বিশ্বযুদ্ধে পর ১৯৯৫ সালে ঘটে যায় ইউরোপের সবচেয়ে বড় গণহত্যা বসনিয়া মুসলিম গণহত্যা।

জাতিসঙ্ঘে প্রস্তাব উঠে সার্বিয়ার বিরুদ্ধে কিন্ত সার্বিয়া গণহত্যার কথা অস্বীকার করে। রাশিয়া ভেটো দেয় যাতে সার্বিয়ায় কোন তদন্ত দল যেতে না পারে! ঠিক বার্মার মতই রাশিয়ার ভেটো ও উস্কানিতে আরও দ্বিগুণ শক্তি নিয়ে মুসলিমদের গণহত্যা করে দেশ ছাড়ে। এর মাঝে আছে আমেরিকাকে দুনিয়া থেকে নাই করে দেওয়ার সার্বিয়ান হুমকি! সার্বিয়া মুসলিম হত্যা থামায়নী সময় যায় জাতিসঙ্ঘের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গণহত্যা বন্ধে সার্বিয়াকে কিছুই করতে পারছেনা তারা। প্রস্তাব উঠলেই রাশিয়ার ভেটো! অবশ্যই এই গণহত্যার সময় ডাচ শান্তিরক্ষি বাহিনীরা সার্বিয়ান সেনাদের বাধা দেয়নি! উল্টো জ্বালানি ভোঁরে দেওয়ার অভিযোগ আছে। জাতিসঙ্ঘের প্রশ্ন উঠায় রাগে ফুসছে আমেরিকা ও জাতিসঙ্ঘ! কিন্ত সার্বিয়াকে কিছুই করতে পারছেনা।

১৯৯৯ সালে আবার নতুন করে মুসলিমদের দেশ ছাড়া ও হত্যা শুরু হলে মার্কিন স্টেলথ গোয়েন্দা বিমান 1999 সালের ২৭ মার্চ F-117A সার্বিয়ায় তথ্য সংগ্রহ করতে যায়। কিন্ত বিধি বাম সার্বিয়া এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম S-125 শুট হয় F-117A আর যায় কোথায় সার্বিয়া যেন আকাশে উঠে যায়। প্রশ্নবিদ্ধ হয় আমেরিকার গোপনে তথ্য সংগ্রহ করার পদ্ধতিকে এইদিকে সার্বিয়ার এক বিমান ফেলে দিয়ে হুমকি তো আরও শতগুন বেড়ে গেল। রাগে ফুসছে আমেরিকা কিন্ত কিছুই বলছেনা বিষয়টা এমন হয়ে দাঁড়াল। কোসভ থেকে মুসলিমদের দেশ ছাড়া করেই ছাড়বে সার্বরা। একই বছর মের ২ তারিখ সার্বিয়া সীমান্তে ডুকে যায় ১ টি এফ-১৬ বিমান সেটি হামলার উদ্দেশ্য নিয়ে কারণ কারণ বিমানটি আনআর্মস অবস্থায় ছিল সেটিও শুট হয় এস-১২৫ দিয়ে! এবার সার্বিয়াকে মাটিতে নামাবার পালা।

এইবার জাতিসঙ্ঘকে বুড়ো অঙ্গুল দেখিয়ে ও রাশিয়ার হুমকি উপেক্ষা করে আমেরিকা হামলে পরল সার্বিয়া উপর! রাজধানী বেলগ্রেডে আমেরিকান বিমান যেন বৃষ্টির মতন মিসাইল ফেলছে। এই যুদ্ধে এরপরে ন্যাটো অংশগ্রহণ করে। অন্ধের মতন বোমা ফেলতে থাকে আমেরিকা ও তার মিত্ররা ফেলার কারণ ছিল এতদিনের রাগ যে সার্বিয়ার উপর! টানা ৭৬ দিন পরে সার্বিয়া সেনাবাহিনী আমেরিকার কাছে আত্নসমর্পন করে। নিহত হয় ৩৫ হাজারের বেশী সার্ব সেনা ও অনেক উচ্চপদস্থ অফিসার। সার্ব বিমানবাহিনীর প্রায় ২৫০+ বিমান সবই ধ্বংস করে দেয় ন্যাটো। রাশিয়া শুধু এখন চেয়ে চেয়ে দেখে এই ৭৬ দিনের ব্যাপক বিমান হামলায় পুরো সার্বিয়া মিশে যায় মাটিতে কোন শহর আর আস্ত থাকেনি। সেনাবাহিনীর সাথে নিহত হয় সমসংখ্যক সিভিলিয়ান মানুষ। মুসলিম গণহত্যার মাষ্টারমাইন্ড সার্ব প্রেসিডেন্ট, সেনাপ্রধান ও শীর্ষ অফিসারদের সাধারণ আসামির মত বেধে নিয়ে আসা হয় ও বিচারের কাঠ গড়ায় দাড় করানো হয়। ইতিহাসে এই একটি কাজ ছাড়া আর কোন কাজ আমেরিকা ও ন্যাটো মুসলিমদের পক্ষে করেনি

ইউটিউবে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের চ্যানেলটি

Share This
Previous Post
Next Post

0 comments: