এমনই এক মুনাযিরায় এরুপ ছিল, সে শুনতে পেয়েছিল যে, আবু হানিফা (হানাফী মাযহাব যার নামে) তাঁর ছাত্রদের সামনে বলেছে জাফর ইবনে মুহাম্মাদ (ইমাম জাফর সাদিক আঃ) ৩টি বিষয় বয়ান করেছেন কিন্তু আমি ৩টি বিষয়কে গ্রহন করি না, যা নিম্নরুপঃ
১/ ‘শয়তানকে আগুনের মধ্যে ফেলে আযাব দেয়া হবে’-এটা ঠিক না, কেননা শয়তান তো নিজেই আগুনের তৈরী।আর যাকে আগুন দিয়ে তৈরী করা হয়েছে তাঁকে আবার কিভাবে আগুন দিয়ে আযাব দেয়া হবে,এটা কখনোই হতে পারে না।
২/ ‘আল্লাহকে দেখা যাবে না’- এটাও ঠিক না। কেননা প্রতিটি অস্তিত্ববান জিনিসই কষ্ট হলেও দেখা সম্ভব।
৩/ ‘ আল্লাহর বান্দাগন যে সকল কাজ করে থাকে তা তাদের নিজের ইচ্ছায় করে থাকে’-এটাও ঠিক না। কেননা অনেক আয়াতে ও রেওয়ায়েতে একথার বিপরীত আয়াত রয়েছে এবং বান্দাগন যে আল্লাহর নির্দেশেই সেই কাজ করে থাকে তা প্রমান করে।
এসব শোনার পর বেহলুল, একখন্ড মাটি হাতে নিয়ে আবু হানিফার কপালে ছুড়ে মারলো। আবু হানিফা বেহলুলের ব্যাপারে হারুনের কাছে নালিশ করলো। হারুন তাঁকে দরবারে হাজির হতে বললো। সে দরবারে হাজির হলে তাঁকে সাজা দেয়ার আদেশ করা হল।
বেহলুল হারুনের দরবারে হাজির হয়ে আবু হানিফাকে বললোঃ
১/ মাটির টুকরাটি যেখানে লেগেছে সেখানে নাকি তোমার ব্যাথা হয়েছে বলেছো, সেই ব্যাথাকে আমায় দেখাও। যদি দেখাতে না পার তবে তুমি যা বলেছো, সমস্ত অস্তিত্বসম্পন্ন কিছুকেই দেখা যায় সেই ব্যাখ্যাটা ভুল।
২/ তুমি বলেছো যে, একই ধরনের জিনিস কখনো একে অপরকে আজাব দিতে পারে না। তাহলে তুমি মাটি থেকে পয়দা হয়েছো সেহেতু মাটির আঘাতে তোমার ব্যথা পাবার কথা নয়।
৩/ আমি তোমাকে মাটির টুকরোটি ছুড়ে মারাতে কোন অন্যায় করিনি, কারন তোমার বিশ্বাস মতে বান্দা তাঁর সমস্ত কাজই আল্লাহর নির্দেশে করে থাকে। সুতরাং আমি নই বরং আল্লাহ তোমাকে মেরেছে।
আবু হানিফা চুপ করে কিছু সময় বসে থাকের পর উক্ত দরবার ছেড়ে চলে যায়। সে এটা বুঝতে পেরেছিল যে, বেহলুলের আঘাতটি তাঁর উল্টা-পাল্টা আক্কিদা-বিশ্বাসের কারনেই ছিল।
দলীল: ( মাজালিসুল মু’মিনিন খন্ড-২,পাতা-৪১৯; বিহজাতুল আমাল খন্ড-২,পাতা-৪৩৬)
ইউটিউবে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের চ্যানেলটি
0 comments: