Wednesday, September 4, 2013

মুতা- অস্থায়ী বিবাহ আহলে সুন্নাদের জন্য গাইড

আমি এখানে খুব সংক্ষেপে মুতা’আ এর ব্যাপারে আলচানা করবোপ্রথমে আমি কুরআনের যে আয়াত মুত’আ এর আনুমতি দিয়ে নাজিল হয়েছিল সেটা আলচানা করবো। এই আলচনা আমি আয়েকটা ভাগে ভাগ করতে চাই।
১) এই আয়াতটার শব্দ গত ভাবে।
২) বিভিন্ন সাহাবী তাবে’ইরা যে বলেছেন এই আয়াত মুত’আ এর জন্য তার রেফারেন্স দেব সুন্নি বই থেকে।
৩) এই আয়াত মুত’আ এর আনুমতি দিয়েছে - সুন্নি মুফাসসিরদের তাফসির থেকে রেফেরেন্স দেব।
৪) হাদিস সমূহ দেব যেখানে রসুল পাক সঃ আনুমতি/ নির্দেশ দিয়েছেন মুত’আ এর জন্য।
৫) “হাদীস” সমূহ যেখানে বর্ণিত হয়েছে যে রসুল পাক মুত’আকে পরে নিষিদ্ধ করেছেন- এই হাদিস গুলির খণ্ডন।এবং পরস্পর বিরোধী সেটা দেখানো।
৬) মুত’আ আসলে দ্বিতীয় খলীফা উমার নিষিদ্ধ করেছিলেন তার প্রমান।
আমাদের প্রিয় ভাই দের কিছু প্রশ্নের উত্তর।
     ১)উমার যদি মুত’আ বন্দ করে থাকেন তাবে সাহাবীরা তা মেনে নিলেন কেন?- এর জাবাবে দেখান যে আহলে সুন্না এর চোখে  আনেক মহান সাহাবী/ তাবেঈ তার পরেও মুত’আ করেছেন।
            ২) মুতা’আ জাহিলি যুগের প্রচলিত বিবাহের রীতি ছিল রসুল পাক সঃ এটাকে পরের দিকে রহিত করেছেন।– এই উক্তির খণ্ডন পরিষ্কার হাদিস দ্বারা প্রমান করবো যে এটা জাহিলি যুগের কোন প্রকার রীতি ছিল না।  
             ৩) মুত’আ মদের মতো ইত্যাদি।
وَالْمُحْصَنَاتُ مِنَ النِّسَاءِ إِلَّا مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُكُمْ ۖ كِتَابَ اللَّهِ عَلَيْكُمْ ۚ وَأُحِلَّ لَكُمْ مَا وَرَاءَ ذَٰلِكُمْ أَنْ تَبْتَغُوا بِأَمْوَالِكُمْ مُحْصِنِينَ غَيْرَ مُسَافِحِينَ ۚ فَمَا اسْتَمْتَعْتُمْ بِهِ مِنْهُنَّ فَآتُوهُنَّ أُجُورَهُنَّ فَرِيضَةً ۚ وَلَا جُنَاحَ عَلَيْكُمْ فِيمَا تَرَاضَيْتُمْ بِهِ مِنْ بَعْدِ الْفَرِيضَةِ ۚ إِنَّ اللَّهَ كَانَ عَلِيمًا حَكِيمًا 
[Forbidden to you] are married woman, except what your right hand possesses. This Allah has written for you, and all other women besides these are permitted to you, so that you may seek them out with your wealth, seeking chastity and not fornication. So when you have contracted temporary marriage [istimt'atum] with them, then give them their words. There is no sin on you for whatever you agree to after this. Indeed, Allah is Knowing, Wise.
Al-Qur’an, Surah An-Nisa, Ayah 24
“(হারাম) তোমাদের জন্য বিবাহিত মহিলা,তাদের ছাড়া যাদের উপর তোমাদের ডান হাত প্রসারিত। এটা আল্লাহ তোমাদের জন্য লিখেছেন। আর এই গুলো ছাড়া অন্য মহিলারা তোমাদের জন্য (হালাল), তোমরা তাদেরকে তোমাদের সম্পদের বিনিময় চাইতে পারও, বিবাহে নেওয়ার জন্য অবৈধ বীর্যপাতের জন্য নয়।  আর যাদের সাথে তোমরা মুত’আ (ইস্তিমতাতুম) করেছ তাদেরকে সম্পদ দাও...............”
কিছু ভাই এই আয়াতের মধ্যে মুত’আ দেখতে পাচ্ছে না, তাই একটু ভেঙ্গে বলতে হচ্ছে।
উপরের আয়াতয়ে আল্লাহ্‌ তা'লা এই ইস্তিমতাতুম (اسْتَمْتَعْتُمْ) শব্দ ব্যবহার করেছেন এটা মুত'আ (متعة) এর verbal form.
ভাল করে আয়াতটা পড়লে দেখতে পাবেন যে সাধারণ বিবাহের কথা বলা হচ্ছে তাতে দেনমহর দিতে বলা হচ্ছে।তার পরের অংশে যেখানে  ইস্তিমতাতুম (اسْتَمْتَعْتُمْ)-করার কথা বলা হচ্ছে সেখানে আবারও বলা হচ্ছে যে তাদেরকে( মেয়েদেরকে) ইস্তিমতাতুম (اسْتَمْتَعْتُمْ) –এর বিনিময় কিছু সম্পদ (দেনমহর) দাও।  ইস্তিমতাতুম কে যদি ভোগ করা বলা হয় তাবে এর অর্থ দাঁড়ায় যে যতবার ভোগ করা হবে ততবার কিছু সম্পদ দিতে হবে, কিন্তু সেটা ননসেন্স কথা হবে। ইস্তিমতাতুম মুতা’আ শব্দের ভার্ব এর রূপ।
এই আয়াত যে মুত'আ বিয়ের ব্যপারে সেটা প্রমানের জন্য আমার কয়েকটা আহলে সুন্নার তাফসির এর রেফেরেন্স দেব।
 ১) তাফসির ইবন কাসির। وقد استدل بعموم هذه الآية على نكاح المتعة -এই আয়াত নিকাহ মুত'আ কে প্রমানিত( ইস্তেদাল- দালিল) করে।
২) তাফসির এ কুরতুবিঃ وقال الجمهور : المراد نكاح المتعة الذي كان في صدر الإسلام আধিক সংখক ( শাহাবি/তাবেই/আলেম/তাফসীর কারক) এর মতে এই আয়াত নিখাহ মুত'আ এর যেটা ইসলামের প্রথমের দিকে চালুছিল
 ৩) তাফসীর এ সালাবিঃ وقال ابن عباس أيضا وغيره إن الآية نزلت في نكاح المتعة-- ইবনে আব্বাস ও অনন্যারা বলেছেন যে এই আয়াত মুত'আ বিয়ের জন্য নাজিল হয়েছে।
৪) তাফসির বাইযাবিঃ نزلت الآية في المتعة- এই আয়াত মুতা’আ সমন্ধে নাজিল হয়েছে।
৫)দেওবান্দি আলেম তার তাফসির হাক্কানি তেঃ এই আয়াত মুত’আর ব্যপারে, যেটা ইসলামের প্রথম দিকে ছিল,এবং উবাই ইবনে কা’ব, সাঈদ ইবন জুবাইর ও ইবন আব্বাসের কেরাত থেকে এটা প্রমাণিত।( নোটঃ- এঁরা সাহাবী ছিলেন)
৬)ইমাম ইবন হাজার আস্কালানিঃ قال مقاتل نزلت في المتعة মকাতিল বলেন এটা মুত’আর জন্য নাজিল হয়েছে।( মকাতিল-তাবেই)
৭) ইমাম নমবী  ( আহলে সুন্না এর বড় আলেন যিনি মুস্লিম শরিফ এর ব্যখ্যা লিখেছে) তাঁর মজমু গ্রন্থে লিখেছেন - وقيل في قوله تعالى (فما استمتعتم به منهن فآتوهن أجورهن) المراد نكاح المتعة যেটা বলা হয় যে তার(আল্লাহের) বাক্য “যখন তোমরা মুত’আ করো (ইস্তিমতাতুম (اسْتَمْتَعْتُمْ), তাদেরকে তাদের মোহর দাও” এটা মুত’আ বিয়ের বিষয়।
 অনুরূপ ভাবে আপনারা বিভিন্নও তফসীর দেখতে পারেন যেমন তাফসির এ মাযহারি, তাফসির তাবারি, দুররুল মান্সুর সুউয়ুতি ইত্যাদি।
৮) ইবনে কাসির বিখ্যাত তাবেঈ মুজাহিদ থেকে বর্ণনা করেছেনঃ وقال مجاهد : نزلت في نكاح المتعة –মুজাহিদ বলেছেন যে এইটা(আয়াত) নাজিল হয়েছে মুত’আ বিবাহের ব্যপারে।
মুতা’আ কুরআনে নাজিল হওয়ার ব্যাপারে অকাঠ্য দলিল কে অস্বীকার না করতে পেরে কিছু কিছু নাসিবি ঘোর পথে এটা প্রমানের চেষ্টা করে যে কুরআনে অন্য আয়াতের মাধ্যমে মুতা’আ রহিত হয়ে গিয়েছে।
মনসুখের (রহিতের) আয়াত তখনই প্রযেয্য যখন অনুমতির আয়াত বর্তমান। সুতারং এক্ষেত্রে নাসিবিরা মেনে নিচ্ছে যে কুরআনে মুতার অনুমতির আয়াত বর্তমান। এখন আমার দেখব মুতাকে সত্যিকি কোন আয়াত রহিত করেছে?
আসলে নাসিবিদের কাছে কন প্রকৃত দলিল নেই বরং কিছু অজুহাত আছে। সেই অজুহাত গুলি আমি উল্লখে করব আর সেগুলির অসারতার প্রমান করব।
অজুহাত ১) মুতা বিয়ে “মুহসিনাত” নয় সুতারং এই বিয়ে বৈধ নয়।
উত্তরঃ“মহসিন” যে বিবাহিত দের বঝানো হয় সেটা দেখাচ্ছি।
 আরবি আয়াতকে অন্য ভাসাতে অনুবাদ করে পড়লে  করে পড়লে যা অবস্থা হয়, নিচে আয়াতটা আবার দেওয়া হল।
<<الْمُحْصَنَاتُ   >>مِنَ النِّسَاءِ إِلَّا مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُكُمْ ۖ كِتَابَ اللَّهِ عَلَيْكُمْ ۚ وَأُحِلَّ لَكُمْ مَا وَرَاءَ ذَٰلِكُمْ أَنْ تَبْتَغُوا بِأَمْوَالِكُمْ م<<مُحْصِنِينَ>> غَيْرَ مُسَافِحِينَ ۚ فَمَا اسْتَمْتَعْتُمْ بِهِ مِنْهُنَّ فَآتُوهُنَّ أُجُورَهُنَّ فَرِيضَةً ۚ وَلَا جُنَاحَ عَلَيْكُمْ فِيمَا تَرَاضَيْتُمْ بِهِ مِنْ بَعْدِ الْفَرِيضَةِ ۚ إِنَّ اللَّهَ كَانَ عَلِيمًا حَكِيمًا {24}
[Yusufali 4:24] Also (prohibited are) women already >>married,<< except those whom your right hands possess: Thus hath Allah ordained (Prohibitions) against you: Except for these, all others are lawful, provided ye seek (them in marriage) with gifts from your property,- >>desiring chastity,<< not lust, seeing that ye derive benefit from them, give them their dowers (at least) as prescribed; but if, after a dower is prescribed, agree Mutually (to vary it), there is no blame on you, and Allah is All-knowing, All-wise.
এখানে >> الْمُحْصَنَاتُ<< (মুহসিনাত) এর মানে বিবাহিত মহিলা দেখুন ভাল করে। যদি আপনার হিসাবে এখানে মুহসিনাত মানে চরিত্রবানধরি তবে আয়াতের মানে এটা দাঁড়ায় যে  চরিত্রবান মেয়েদের বিয়ে করা হারাম!!!!!! কি অবস্থা দেখুন আপনার দেওয়া দ্বিতীয় বার একই ওয়ার্ড ব্যবহার করা হয়েছে সেখানেও বিবাহে নেওয়ার উদ্দেশ্য বলা হচ্ছে। এই খানে <<مُحْصِنِينََ>> غَيْرَ مُسَافِحِينَ – ‘বিয়ের উদ্দশ্যে অবৈধ বীর্যপাতের জন্য নয়অর্থাৎ যাদের হালাল করা হয়েছে তাদের কে মালের পরিবর্তে বিয়ের উদ্দেশ্যে নিতে বলা হয়েছে। -এই গুলিসব স্থায়ী বিয়ের কথা। আর   مُسَافِحِينَ-‘মুসাফিহিনমানে বীর্যপাত,  ‘গাইরে মুহসাফিহিন’- মানে অবৈধ বীর্যপাতঅর্থাৎ এর মানে দাঁড়ায় বিয়ের উদ্দশ্যে অবৈধ বীর্যপাতের জন্য নয়অনুবাদকারক কিভাবে lust’  বলে?
এই বাক্যের পরেই মুতার বাক্য আসছে। এর আগে কুরআন থেকে প্রমান দেওয়া হয়েছে যে সাধারণ বিয়েতে আকদ ( কবুল) সম্পন্ন হওয়ার সাথে সাথে মোহর ফরজ হয়ে যায়। এমনকি না ছুঁয়ে ও যদি তালাক দেয় তবেও মোহরের অর্ধেক দিতে হবে।  কিন্তু মুতার আয়াতে, বলা হচ্ছে  যাদের সাথে ইস্তামতা  করেছ তাদেরকে সম্পদ দাও  এখানে সম্পদ দেওয়াটা ইস্তামতা করার উপর নির্ভর করে। যদিও আগে ঠিক হয়ে যায় কত মোহর হবে।
অজুহাত ২) মুতা Proper Chaste Marriage নয় তাই এটা বৈধ নয়।
উত্তরঃ দেখুন আপনাদের কথা অনুজাই রসূল পাক সাঃ ‘un proper unchaste  Marriage –এর হুকুম দিচ্ছে!!
) সুন্নি হাদিস অনুজাই রাসুল সাঃ মুত করার হুকুম দিয়েছে।
قَالَ أَمَرَنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِالْمُتْعَةِ عَامَ الْفَتْحِ حِينَ دَخَلْنَا مَكَّةَ ثُمَّ لَمْ نَخْرُجْ مِنْهَا حَتَّى نَهَانَا عَنْهَا‏.......
 “(সাবরাল জুহান্নি) রসূল সাঃ আমাদের মুতার হুকুম দিলেন...............”। (أَمَر আমর মানে হুকুম)
......... سبرة بن معبد أن نبي الله صلى الله عليه وسلم عام فتح مكة أمر أصحابه بالتمتع من النساء
“সাবরা বিন মাবাদ বর্ণনা করেছেন যে মক্কা বিজয়ের দিন রসূল সাঃ  তাঁর সাহাবিদের মুতা করার হুকুম দিয়েছেন...............। 
( Note: as usual the Nasibis  mistranslated the word “AMR” as permitted… where as the AMR means Order)
সুতারং আহলে সুন্নার যুক্তি অনুসারে রসূল পাক কাম চরিতার্থ করার হুকুম দিয়েছেন!!!? আপনারা মুতা এর বিরোধিতা করতে গিয়ে রসুলকেই অভিযোগ করে ফেললেন!!!
নিজেদের মনগড়া তাফসির করতে গিয়ে কি অবস্থা!! আপনাদের মনগড়া কথা সুনবো যে মুতা unchaste!! না   এটা মানব যে রসুলের কোন বাজে কাজের নির্দেশ দেয় না। কোনটা মানব??
আপনাদের কথা মানব না ইবনে আব্বাসের কথা মানব? আর কুরআনের ব্যাখ্যা রসূল সাঃ দিয়েছেন, তিনি মুতার নির্দেশ দিয়েছেন।
আজুহাত ৩)যাদের বিয়ের সামর্থ্য নেই, আল্লাহ তাদেরকে নিজ অনুগ্রহে অভাবমুক্ত না করা পর্যন্ত তারা যেন সংযম অবলম্বন করে।”— (সূরা আন-নূর: ৩৩)
সুতারং মুতা বিয়ে করতে হবে না সংযম পালন করতে হবে।কারণ মুতা বিয়েতে সামর্থ্য লাগে না।
-    উত্তরঃ এটা মুতা বিয়ে কে কিভাবে রহিত করে? সামর্থ্য না থাকলে , সংযম করতে বলা হচ্ছে।
সাধারণ বিয়েও বিয়ে, সামর্থ্য লাগে। মোহর লাগে।
মুতা বিয়ে ও বিয়ে সামর্থ্য লাগে। মোহর লাগে।
এই কথা যে সূরা নুরের ৩৩ আয়াত মুতার বিরুদ্ধে #বড় আয়াত! দেখুন আপনাদের এই বড় খোজ কে রসুলে আকরাম সাঃ কেমন ভাবে #REFUTE করছেন!
সূরা নুর ৫ম-৬ম হিজরিতে নাজিল হয়েছিল, আর নবী সাঃ ৮ম হিজরিতে মক্কা বিজয়ের সময় মুতার নির্দেশ দিচ্ছেন!!
“সাবরা বিন মাবাদ বর্ণনা করেছেন যে মক্কা বিজয়ের দিন রসূল সাঃ  তাঁর সাহাবিদের মুতা করার হুকুম দিয়েছেন...............। 
USC-MSA web (English) reference : Book 8, Hadith 3258
শূরা নুরঃ৩৩ মুতার বিরূদ্ধে আপনি জেনে গেলেন, আর রসুল সাঃ নিজে জানলেন না!!!
সমস্ত মুসলিম জানে যে শরিয়াতে ( স্থায়ী বিয়ে বা অস্থায়ী বিয়ে হোক না কেনও)  মোহরের কনো সর্বউচ্চ বা সর্বনিম্ন কনো সীমারেখা রাখেনি।
ক)আহলে সুন্না এর মতে লোহার আংটি  মোহর হিসাবে দিয়ে বিয়ে করা যায়।
“ রসূল সাঃ একজনকে বললেন ‘বিয়ে করো এমনকি (মোহর হিসাবে) একটা লোহার আংটি দিয়েও”
---সহিহ বুখারি USC-MSA web (English) reference, Vol. 7, Book 62, Hadith 80
খ) আহলে সুন্নার মতে এক জোড়া জুতা মোহর দিয়েও বিয়ে করা যায়।
  “বনু ফাযারাহ এর একজন মহিলা এক জোড়া স্যন্ডেল (মোহর হিসাবে) নিয়ে বিয়ে করেছিল, সুতরাং রসূল সাঃ তাকে বললেন যে তুমি কি নিজেকে নিজের সম্পদকে দিতে চাও এক জোড়া স্যন্ডেলের বিনিময়?সে বলল হ্যা’, বললেনতিনি  (রসূল আল্লাহ সাঃ) এটাকে স্বীকৃ্তি দিলেন
-    - সুনান আত তিরমিযি খন্ড ১ পাতা ১৫২।
) আহলে সুন্নার মতে কোন টাকা পয়সা ছাড়াও বিয়ে করা যায়।
কোন কোন ব্যাক্তির সম্পূর্ণ কুরাআন মুখস্ত ছিল আর অন্যদের এর কিছু অংশ মুখস্ত ছিল, এবং তাদের বিয়ে হয়েছিল এইগুলির ভিত্তিতে
--ফাতহুল বারী সারাহ সাহিহ আল বুখারি,ইবনে হাজর আস্কালানি। খন্ড পাতা ১৭৪।
) সুন্নি ফিকহার ইমামগণ ইমাম সাফেই, ইমাম আহমাদ বিন হাম্বাল, সুফিয়ান সাউরি, ইমাম ইশাক এর ফতয়া অনুসারে মোহরের কনো সীমারেখা নেই,বরং নিজের কাছে যাই থাক সেটাকেই মোহর হিসাবে ধার্য করা যাবে।
দেখুন ) মজমা আস সারাহ আল মাহাযিব খন্ড ১৫ পাতা ৪৮২, ইমাম নাবমী।
   ২)আল মুগনি খন্ড ৬ পাতা ৬৮০, ইবনে কুযাইমাহ।
ঙ) সালাফিদের প্রিয় আলেম ইবনে হজম তার মুহাল্লা তে লিখেছেনঃ খণ্ড ১ পাতা ৪৯৭
  “ তার সমস্ত সম্পদের মোহর হতে পারে, কম বা বেশী, গম বা যব ইত্যাদির দামেও, এমনকি যেকোন হালাল কাজও যেমন কুরআনের থেকে কিছু শিক্ষা দেওয়া, ঘর বানান বা সেলাইয়ের কাজ এর শিক্ষা দেওয়া ইত্যাদি, যদি তারা এটা মেনে নেয়”।
সুতারং উভয় বিয়ের ক্ষেত্রে কোন রকম নিম্ন সীমা নেই।
 
অজুহাত ৪) মুতা বিয়ে কামনা চরিতার্থ করারা জন্য সুতারং এটা বৈ্ধ নয়।
উত্তরঃ এর উত্তর আগেই দিয়েছি,  যেখানে পরিষ্কার ভাবে দেখিয়ে দিয়েছি যে মহসিন মানে কি আর -‘মুসাফিহিন’ মানে কি।এখানে একটু যোগ করছি মাত্র।
সুন্নি ফেকা অনুজাই  যুদ্ধ বন্দিনীদের সাথে কামনা চরিতার্থ করার জন্য ‘আজল’ করা যায়।
(আজল- সংগম করার সময় বীর্যপাতের আগেই লিঙ্গকে বার করে নেওয়া কে বলে)
সাহিহ মুসলিমঃ
“আবু সিমরা আবু খুদরিকে বললেন ‘ ও আবু সাইদ আপনি কি শুনেছেন নাবি সাঃ আজল স্মম্নধে কিছু বলেছেন? তিনি বললেন হা, আমরা নবী সাঃ এর সাথে বিল মুস্তআলাক এর যুদ্ধে গিয়েছিলাম, আর কিছু সুন্দরী আরবকে মহিলাদের বন্দিনী করলাম,{ আমরা তাদের আমরা তাদের #কামনা করলাম কারণ আমরা স্ত্রীদে্র অনুপুস্থিতিতে ভুগছিলাম, আবার আমরা তাদের জন্য মুক্তিপণ এর আশা করছিলাম। ফলে আমার তাদের সাথে #সংগম করার সিদ্ধান্ত নিলাম কিন্তু আজল এর মাধ্যমে।}কিন্তু আমরা বললাম যে আমরা এটা করছি কিন্তু রসূল সা; আমাদের সাথে আছেন কেন তাকে জিজ্ঞেস করছি না? ফলে আমরা রসূল সাঃ কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন ‘এটা কনো ব্যপার নয় যে তোমরা এটা করো আর না করো, কারণ প্রত্যেক আত্মা যার জন্মগ্রহণ করার সে জন্মগ্রহণ করবে কিয়ামত সময় পর্যন্ত”।
অজুহাত ৫) মুতা মদের মত প্রথমে হালাল ছিল পরে হারাম হয়ে যায়।
এখানে আমি নাসিবিদের বলতে চাই যে তার কুরআনের কোন একটা আয়াত আনুক যেখানে মদকে হালাল বলা হয়েছে!! না কুরআনে কোন আয়াত নেউ যাখানে মদকে হালাল বলা হয়েছে, তাবে মদকে মুতার সাথে কি ভাবে তুলনা করা হয়? আসলে এটা বলে সাধারণ জনগণকে ধোঁকা দেয় নাসিবিরা।
দ্বিতীয়ত নাসিবিরা কোন একটা হাদিস আনুক যেখানে রসুল সাঃ মদ খেতে আদেশ করছেন। অথচ মুতার ক্ষেত্রে কুরআনের আয়াত বিদ্যমান ও রসুলের সাঃ এর নির্দেশ বর্তমান।
রসূল সাঃ বলেছেন যে ঃ
يقول عنها نبينا صلى الله عليه وسلم - : " الخمر أم الخبائث " ( حديث حسن ذكره الألباني في السلسلة الصحيحة : 1854 )

وقال رسول الله صلى الله عليه وسلم - : " الخمر أم الفواحش ، و أكبر الكبائر، من شربها وقع على أمه وخالته وعمته " ( حديث حسن بشواهده قاله الألباني في السلسلة الصحيحة : 1853 )
‘মদ উম্মুল খবাইস’ ( সিলসিলাতুস সাহিহা আল বানী)
রাসুলাল্লাহ বলেনঃ মদ উম্মুল ফওয়াহেশ,এবং সব থেকে বড় গোনাহ,যে কেউ পান করে সে নিজের মা এবং খালা এবং ফফুর সাথে জেনা করে!
 ( সিলসিলাতুস সাহিহা আল বানী)
মদ কোন দিনই হালাল ছিল না, কোন নবিদের শরিয়াতেও না, নবী সাঃ এর শরিয়াতেও না।
আল্লাহ কুরআনে বলেছেন “যারা পূর্বে অতীত হয়ে গেছে, তাদের ব্যাপারে এটাই ছিল আল্লাহর রীতি। আপনি আল্লাহর রীতিতে কখনও পরিবর্তন পাবেন না”। ৩৩:৬২
 কিছু সাহাবী খেত বলে জোর করে হালাল বলা যায় না। আর মদ হারাম করে আল্লাহ আয়াত নাজিল করেছেন।
প্রশ্নঃ আমি মুত’আ হালালের ব্যাপারে কুরআনের আয়াত আর অনেক তাফসীর কারকদের তাফসির দিয়েছি। মদ হালাল ছিল বলে কোন একটা মদ হালালের আয়াত আনুন যেখানে সাহাবীগণ, তাবেই গণ বলেছেন যে এই অয়াত অনুসারে মদ হালাল ছিল।
অজুহাত ৬) উক্ত আয়াতে মুতার কথা বলা হচ্ছে না বরং “সুবিধা নেওয়া বলা হচ্ছে” কারণ “ইস্তামতা” এর শব্দিক মানে “সুবিধা প্রাপ্ত” হয়।
উত্তরঃ তাফসির কারকগণ নিজেরাই এটা মানে যে “ইস্তামতা” এর শরিয়াতের পারিভাসা মানে মুতা বিয়েকে বলে, সেক্ষেত্রে শুধু মাত্র বিরোধিতা করার জন্যই এই অজুহাত উল্লেখ করে। তবুও নিছে বিশদ জবাব দেওয়া হল।
১)সামান্য ভাষার জ্ঞান যাদের আছে সবাই জানে যে একই শব্দ ব্যাকে তার প্রয়োগের উপর ভিন্ন অর্থ প্রকাশ করে। “ইস্তিমতাতুম” শব্দের ক্ষেত্রেও অনুরুফ।
যদি “ইস্তিমতাতুম” শব্দের মানে যেমন আপনি করেছে “সুবিধাপ্রাপ্ত হওয়া” হয় তবে পবিত্র কুরআনের এই শব্দের পরে যেটা বলা হয়েছে যে “.........সাথে তোমরা মুত’আ (ইস্তিমতাতুম) করেছ তাদেরকে সম্পদ দাও”। এখানে তাদেরকে সম্পদ দাও বলা হচ্ছে শুধু “সুবিধাপ্রাপ্ত হওয়া” এর জন্য? অর্থাৎ আপনার কথা মত স্ত্রীদের থেকে সুবিধা নিলে তাদেরকে সম্পদ ( মোহরানা) দিতে হবে! যেটা একেবারে অযৌতিক কথা। আরও এই আয়াতের (“.........সাথে তোমরা মুত’আ (ইস্তিমতাতুম) করেছ তাদেরকে সম্পদ দাও”) মানে এটাও দাঁড়াবে যে যতবার সুবিধা নেবে ততবার তাকে সম্পদ দিতে হবে, সেটাও আরও অযৌতিক।
অপর পক্ষে মোহর ওয়াজিব শুধুমাত্র বিয়ের ‘আকদ’ সম্পন্ন হলে – (কবুল ইত্যাদির মাধ্যমে বিয়ে সম্পন্ন হলে। কোন রকম “সুবিধাপ্রাপ্ত হওয়া” ( আপনাদের ভাষায়) এর উপর নির্ভর করে না। যেমন ৪:৪ “এবং স্ত্রীদেরকে তাদের মোহর দিয়ে দাও উপহার হিসাবে...”। এমনকি বিয়ে সম্পন্ন হওয়ার পর যদি স্ত্রীকে ছোঁয়া না হয় তবুও অর্ধেক মোহর ওয়াজিব, ২ঃ২৩৬-২৩৭ “স্ত্রীদেরকে স্পর্শ করার আগে এবং কোন মোহর সাব্যস্ত করার পূর্বেও যদি তালাক দিয়ে দাও, তবে তাতেও তোমাদের কোন পাপ নেই। তবে তাদেরকে কিছু খরচ দেবে।.................................আর যদি মোহর সাব্যস্ত করার পর স্পর্শ করার পূর্বে তালাক দিয়ে দাও, তাহলে যে, মোহর সাব্যস্ত করা হয়েছে তার অর্ধেক দিয়ে দিতে হবে............”
সুতরাং নাসিবিদের মত অনুযাজা “সুবিধাপ্রাপ্ত হওয়া” ধরলে মোহর এর কথা আসত না।
২) দ্বিতীয়তঃ নিচে আমি হাদিস উল্লেখে করছি যেখানে “ ইস্তামতা” শব্দকে মুত’আ তথা “Temporary marriage”  হিসাবে নেওয়া হয়েছে।
অ) وَحَدَّثَنَا الْحَسَنُ الْحُلْوَانِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، قَالَ قَالَ عَطَاءٌ قَدِمَ جَابِرُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ مُعْتَمِرًا فَجِئْنَاهُ فِي مَنْزِلِهِ فَسَأَلَهُ الْقَوْمُ عَنْ أَشْيَاءَ ثُمَّ ذَكَرُوا الْمُتْعَةَ فَقَالَ نَعَمِ اسْتَمْتَعْنَا عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَبِي بَكْرٍ وَعُمَرَ ‏.‏
Ati' reported that jibir b. Abdullah came to perform 'Umra, and we came to his abode, and the people asked him about different things, and then they made a mention of temporary marriage, whereupon he said: Yes, we had been benefiting ourselves by this temporary marriage during the lifetime of the Prophet () and during the time of Abu Bakr and 'Umar.
সহিহ মুসলিমঃ USC-MSA web (English) reference : Book 8, Hadith 3248
আ) حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ عُمَرَ، حَدَّثَنِي الرَّبِيعُ بْنُ سَبْرَةَ الْجُهَنِيُّ، أَنَّ أَبَاهُ، حَدَّثَهُ أَنَّهُ، كَانَ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ ‏ "‏ يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنِّي قَدْ كُنْتُ أَذِنْتُ لَكُمْ فِي الاِسْتِمْتَاعِ مِنَ النِّسَاءِ وَإِنَّ اللَّهَ قَدْ حَرَّمَ ذَلِكَ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ فَمَنْ كَانَ عِنْدَهُ مِنْهُنَّ شَىْءٌ فَلْيُخَلِّ سَبِيلَهُ وَلاَ تَأْخُذُوا مِمَّا آتَيْتُمُوهُنَّ شَيْئًا‏"
0 people, I had permitted you to contract temporary marriage with women, but Allah has forbidden it (now) until the Day of Resurrection. So he who has any (woman with this type of marriage contract) he should let her off, and do not take back anything you have given to then (as dower).
সহিহ মুসলিমঃ  USC-MSA web (English) reference Book 8, Hadith 3255
ক)وَحَدَّثَنِي عَنْ مَالِكٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ، أَنَّ خَوْلَةَ بِنْتَ حَكِيمٍ، دَخَلَتْ عَلَى عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ فَقَالَتْ إِنَّ رَبِيعَةَ بْنَ أُمَيَّةَ اسْتَمْتَعَ بِامْرَأَةٍ فَحَمَلَتْ مِنْهُ ‏.‏ فَخَرَجَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ فَزِعًا يَجُرُّ رِدَاءَهُ فَقَالَ هَذِهِ الْمُتْعَةُ وَلَوْ كُنْتُ تَقَدَّمْتُ فِيهَا لَرَجَمْتُ ‏
Yahya related to me from Malik from Ibn Shihab from Urwa ibn az- Zubayr that Khawla ibn Hakim came to Umar ibn al-Khattab and said, ''Rabia ibn Umayya made a temporary marriage with a woman and she is pregnant by him.'' Umar ibn al-Khattab went out in dismay dragging his cloak, saying, "This temporary marriage, had I come across it, I would have ordered stoning and done away with it! 
মুওাত্তা USC-MSA web (English) reference  Book 28, Hadith 42
(নোটঃ উপরের হাদিস গুলিতে দেওয়া হয়েছে শুধু এটা দেখানর জন্য যে “ইস্তামতা” শব্দটি মুত’আ তথা “অস্থায়ী বিবাহ” হিসাবে সাহাবীগণ অর্থ করত।)
উপরন্ত নিচে আরও কিছু সুন্নি রেফারেন্স দেওয়া হল যে সাহাবী ও তাবেইগণ সূরা নিশা এর আলচ্য আয়াত (২৪ নং) কে যেমন ব্যাখ্যার সহিত পড়তেনঃ
সাহাবীগণ এই ভাবে পড়তেন “فما استمتعتم به منهن إلى أجل مسمى” – অর্থাৎ “যাদের সাথে তোমরা মুত’আ (ইস্তিমতাতুম) করেছ নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত............”। অর্থাৎ “নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত” ব্যাখ্যা হিসাবে যোগ করতেন, এটা প্রমান করে যে আয়াতটা মুত’আ এর ব্যাপারে।
  i) তাফসির দুররুল মান্সুর
 ii) তাফসির তাবারি।
 iii) ফাতহুল কাদীর।
iv) তাফসির ইবনে কাসির।
v) তাফসির রুহুল মানি।
vi) তাফসির কাসসাফ।
vii) তাফসির এ মাযহারি।
viii) তাফসির আহকামুল কুরআন।
ix) মুস্তাদ্রক আল হাকিম।
x) তাফসির হাক্কানি।
xi) তাফসির জামে আল বায়ান।
আমার কাছে এই মুহূর্তে ৩০ টীর বেশী–এর রেফারেন্স আছে আহলে সুন্নার গ্রন্থ থেকে,  যেখানে বলা হিয়েছে সাহাবিরা এই ভাবে পড়তেন “فما استمتعتم به منهن إلى أجل مسمى” – অর্থাৎ “যাদের সাথে তোমরা মুত’আ (ইস্তিমতাতুম) করেছ নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত............”। অর্থাৎ “নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত” ব্যাখ্যা হিসাবে যোগ করতেন,
                      
তাফসির এ দুররুল মান্সুরঃ
وأخرج عبد بن حميد وابن جرير وابن الأنباري في المصاحف والحاكم وصححه من طرق عن أبي نضرة قال : قرأت على ابن عباس { فما استمتعتم به منهن فآتوهن أجورهن فريضة } قال ابن عباس : { فما استمتعتم به منهن إلى أجل مسمى } .
“ বর্ণনা করেছেনঃ  আব্দে বিন হামিদ, ইবনে জরির, ইবনে আনবারি তার মুসহফে, আর হাকিম এটাকে সহিহ সাবস্ত্য করেছেন, আবু নদরা এর মাধ্যমে বলেছেন আমি ইবনে আব্বাসের সামনে পড়লাম “{ فما استمتعتم به منهن فآتوهن أجورهن فريضة” ইবনে আব্বাস বললেন “{ فما استمتعتم به منهن إلى أجل مسمى }... অর্থাৎ “(ইস্তিমতাতুম) করেছ নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত”।
অনুরূপ ভাবে ইবনে ক’আব ও যুবাইর বিন সাইদ ও এইভাবে পড়তেন { فما استمتعتم به منهن إلى أجل مسمى }... অর্থাৎ “(ইস্তিমতাতুম) করেছ নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত”।
--মুশহাফ, সুলাইমান বিন আশাস, আবু দাউদ এর ছেলে।
অজুহাত ৭) মুতায় তালাক নেই সুতারং এটা তালাকের আয়াত দ্বারা রহিত হয়ে যায়।
উত্তরঃ কেনও? মুত’আ তে তালাক হয় আর প্রথমেই সময় নির্ধারিত হয়ে যায়। সুতরাং চুক্তিবদ্ধ হওয়ার সময় এটা ঠিক হয়ে যায়। এই ভাবেই সাহাবীগণ মুত’আ করেছে। আর রসূল সাঃ অনুমতি দিয়েছেন। সুতরাং মুত’আ সেই ভাবেই হবে যে ভাবে রসুলের যুগে হত
আরও রসুল সাঃ তালাকের আয়াত নাজিল হওয়ার অনেক অনেক পরেও মুতার নির্দেশ দিয়েছেন।
অজুহাত ৮) সূরা মুমিনিনের আয়াত ৬ মুতাকে মনসুখ (রহিত) করে দেয়)
উত্তরঃ
إِلَّا عَلَىٰ أَزْوَاجِهِمْ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُمْ فَإِنَّهُمْ غَيْرُ مَلُومِينَ (২৩:৬)
যে আয়াতটা দেওয়া হচ্ছে মুত’আকে রদ করার জন্য সেটা মক্কায় নাজিল হয়েছে, আর মুত’আ কে রসূল সাঃ মাদিনাতে মক্কা বিজয়ের সময়ও মুত’আ করতে অনুমতি দিচ্ছে। অর্থাৎ রিফাত ভাই কি বলতে চান যে রসূল সাঃ জানতেন না এই আয়াত দিয়ে মক্কাতেই মুত’আ নিষিদ্ধ হয়ে গিয়েছে?!!!!
সুতরাং আপনার আনা আয়াত যদি মুত’আ এর রহিত হিসাবে মানা হয় তাবে রসুলের সাঃ রসুলত্বের উপর বিশ্বাস কে জলাঞ্জলি দিতে হবে।
তা সত্বেয়ও আমি এখানে সুন্নি উলেমাদের উক্তি তুলে ধরছি যেখানে তার পরিষ্কার ভাবে আপনার কথাকে খণ্ডন করেছে।
১) এবং তারা, যারা নিজের স্ত্রী অথবা তাদের ডান হাত যা অধিকার করে তা ব্যতিত নিজের ব্যক্তিগত অংশ/গোপোন অংগ/গোপোন অংশ (private parts) সংরক্ষণ/ হেফাজত করে”;- এই আয়াত এর আলোচনায় আল্লামাহ সাব্বির আহমেদ উস্মান তার ফাতাহ আল মুসলিম সারহে মুসলিমগ্রন্থের ভলিউম-৩, পৃষ্ঠা ২২১ এ উল্লেখ করেছেন ---- উক্ত আয়াত মক্কায় নাজিল হয়েছে
২) সালাফি/আহলে হাদিসি আল্লামা ওয়াহীদ উদ্দিন জামান, তার লুগাতুল হাদিস খণ্ড ৩ পাতা ১০৫
“ এই আয়াতটা ‘...স্ত্রীগন ও যাদের উপর তোমাদের দান হাত প্রসারিত ছাড়া’ দুটো সূরাতে এসেছে কিন্তু সন্ধেয়বিহীন ভাবে দুটো সুরাই মক্কার। কিন্তু মুত’আ এই আয়াতের নাজিলের পরেও করা হয়েছে।“
৩) আল্লামা ওয়াহীদ উদ্দিন জামান তার বিখ্যাত বুখারির সারাহ, তাইসীরুল বারী সারাহ সাহিহ আল বুখারিতে মুত’আ কে এই (২৩:১-৬) আয়াত দ্বারা না রহিত কারিদের খন্ডন করেছেনঃ
“যারা  এই আয়াত  ‘..স্ত্রীগন ও যাদের উপর তোমাদের ডান হাত প্রসারিত ছাড়া’ দ্বারা মুতা হারাম বলে তাদের গলতী হয়েছে, কারণ এই আয়াত মক্কার, আর সর্বমতে মুতা এর পরেও হালাল ছিল”।
--খন্ড ৬ পাতা ১১১
৪) আল্লামা সাব্বির আহমাদ উস্মানি তার ‘ফাতাহ আল মুলহিম সারাহ মুসলিম’ এর ৩য় খণ্ড ৪৪০ পাতাতে লিখেছেনঃ
“ নিকাহ মুত’আ একটা হালকা ধরনের বিয়ে এবং এটা মুবাহ ছিল এবং এটাকে হারাম করা হয়েছে সাধারণ ভাবে, যখন এই ধরনের নিকাহ কনো লাভ আনে না- তালাক, উত্তরাধিকার অথবা অন্যান্য অধিকার প্রমানিত হয় না, যেটা সাধারণ বিয়ের ক্ষেত্রে আছে। যদিও একটা দৃষ্টিকোণ থেকে এটা এক ধরনের বিবাহ।মুতার স্ত্রীলোক ‘জাওয়াজ নাকস’ ( ) আর এই জন্যই তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়না, যখন আল্লাহ এই আয়াত নাজিল করলেন
 ‘‘..স্ত্রীগন ও যাদের উপর তোমাদের ডান হাত প্রসারিত ছাড়া’। এই আয়াত মুতাকে বাতিল করে না, মুতার স্ত্রীলোক ও একভাবে স্ত্রী এর সংজ্ঞা এর মধ্যে আসে, যেমন আমারা প্রমান করেছি যে মুতা ঐসব ক্ষেত্রে প্রযেয্য যেখানে যেনা থেকে নিজে কে আলাদা/বাঁচানো করা যায়। #কিভাবে_এই_আয়াতকে_মুতা_নাজাইজ_হওয়ার_প্রমান_হিসাবে_দেওয়া_যেতে_পারে_যেখানে_এই_আয়াত_মক্কার, আর আমাদের জানা অনুসারে কনো আলেম একথা দাবি করেনি মুতা খাইবারের আগে বারণ হয়েছে। যদিও খাইবারের পরে মানা হওয়ার ব্যাপারে উলেমাদের মধ্যে বিভিন্ন মত আছে”।  
৫) তাফসির রুহ আল মাআআনি, আল্লাম আলুসি, ভলিউম -৯, পৃষ্ঠা-১০:

هذه المقامات صريح النقل تعين القول بأن الآية مكية بمعنى أنها نزلت قبل الهجرة وأشكل الإستدلال بها على تحريم المتعة بعد تحليلها بعد الهجرة
“...উক্ত আয়াত টি মক্কায় এবং হিজরত এর পূর্বে নাজিল হয়েছিল, আর যেহেতু হিজরত এর পরেও মুতা বিবাহ হালাল ছিল তাই, উক্ত আয়াত মুতা বিবাহের অবইধতার(হারাম) প্রমান হিসাবে দেওয়া মুসকিল”।
৬) “কিছু কিছু বর্ণনা কারি উক্ত আয়াত এর মাদ্ধমে মুতা বিবাহ (অস্থায়ী বিবাহ) কে নিসিদ্ধ প্রমান কোরতে চান। তারা এই যুক্তি তুলে ধরে যে, একজন মহিলা যার সাথে কেউ দাম্পত্য সম্পর্কে প্রবেশ করেছে অস্থায়ী ভাবে, তাকে না স্ত্রী বলা জায় না দাসী বলা জায়। অবশ্যই সে দাসী নয়, আবার সে স্ত্রীও নয়, কারন একজন স্ত্রীর উপর আরপিত আইনি নিসেধাজ্ঞা তার উপর প্রযোজ্য নয়। সে স্বামীর উত্তরাধিকার ও হতে পারেনা আবার স্বামী ও তার উত্তরাধিকার হতে পারেনা।অথবা সাধারন বিবাহের সাথে সম্মন্ধিয় আইন যেমন , ইদ্যত,তালাক বা ভরন পোসন ইত্যাদি আইন দারাও সে শাসিত নয়। অথবা স্বামী দারা এমন ও প্রতিজ্ঞা করা হয়না যে সে (লোক) তার(মহিলা) সাথে দাম্পত্য সম্পর্ক স্থাপন করবেনা। তাই তাকে দাসী ও বলা জায়না আবার স্ত্রী ও বলা যায়না।সাভাবিক ভাবেই তাই সে এই দুই(স্ত্রী,দাসী) এর বাইরে জাদের অন্বেষণ কারী কে কুরআন এ অপরাধী বলা হয়েছে। এই হল তাদের যুক্তি। এটি একটি জোরাল যুক্তি, কিন্তু একটি দুরবলতার কারনে মুতা নিসিদ্ধ হবার জন্য এই আয়াত টিকে মানা যায়না। মহা নবী (সঃ) মুতা চুড়ান্ত ভাবে নিষেধ করেন মক্কা বিজয় এর বছর। কিতু এর আগে মুতাহ হালাল ছিল যা  অসংখ্য বিশ্বস্ত হাদিস দারা প্রমানিত। যেখানে সর্ব সম্মত ভাবে উক্ত আয়াত মক্কায় নাজিল হয়েছে বলে স্বীকৃত সেখানে এটা কিভাবে হতে পারে যে রাসুল (সঃ) আল্লাহর নিষেধাজ্ঞা আসার পরেও তা আরোপ করেন নি এবং এই নিষিদ্ধ কাজ হতে দিয়েছেন মক্কা বীজয় এর আগ পর্যন্ত”?
--মাউলানা আবুল আলা মাউদুদি তাঁর তাফসিরে। সূরা ২৩:৬
“সুতারং একথা বলাই  নির্ভুল যে, মুতা হারামের বিষয়ে কুরআন মজীদের কোন সুস্পষ্ট ঘোষণার মাধ্যমে নয় বরং নবী সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাতের মাধ্যমেই হারাম হয়েছে” 
--মাউলানা আবুল আলা মাউদুদি তাঁর তাফসিরে। সূরা ২৩:৬
৭) তাফসীর কাশশাফ, খন্ড , পৃষ্ঠা ৭৬, সূরা মুমিনুনের তাফসীরেঃ
যদি জিজ্ঞাসা করো, এই আয়াতের ভিতর কোথাও মুতাহর নিষিদ্ধকরণের ব্যাপারে কোন প্রমাণ আছে কি’?
“জবাব হল, না, কারণ নিকাহ আল-মুতাহতে একজন মহিলা স্ত্রী বলে গণ্য হবে”
উপরের অজুহাত সমূহের অসারতা প্রমান করে আমি নিচে আরও কিছু প্রমান দিলাম যে সাহাবিগন মুতাকে  রসুলের সাঃ এর ওফাতের পরেও হালাল মনে করতেন ( উপরের সাহাবী ও তাবেই দের মতামত দিয়েছি আরও দেওয়া হল।
১) আহলে সুন্নার বিখ্যাত আলেম হাফিয ইবন হাজার আস্কালানি যিনি বুখারির ব্যখ্যা সহ প্রচুর বই লিখেছেন যেগুলি আহলে সুন্না নিজেরা শেষ রেফেরেন্স হিসাবে ব্যবহার করেন। তাঁর বই তালখিয আল হাবির এ লিখেছেনঃ
قال وقد ثبت على تحليلها بعد رسول الله صلى الله عليه وسلم جماعة من السلف منهم من الصحابة أسماء بنت أبي بكر وجابر بن عبد الله وابن مسعود وابن عباس ومعاوية وعمرو بن حريث وأبو سعيد وسلمة ومعبد ابنا أمية بن خلف قال وروا جابر عن الصحابة مدة رسول الله صلى الله عليه وسلم ومدة أبي بكر ومدة عمر إلى قرب آخر خلافته قال وروي عن عمر أنه إنما أنكرها إذا لم يشهد عليها عدلان فقط وقال به من التابعين طاوس وعطاء وسعيد بن جبير وسائر فقهاء مكة
“ নবী সঃ এর ওফাত এর পরে সালাফ এর একটা জামাত এটাকে ( মুত’আ কে হালাল মনে করত।এর মধ্যে যারা সাহাবারা হলেন আসমা বিনতে আবি বকর,জাবির, ইবনে মাসুদ, ইবনে আব্বাস, মুয়াবিয়া, আম্র বিন হারিস, আবু সাইদ, সালামা, মুওাবেদ বিন উমায়াজাবির বর্ণনা করেছেন........................কিছু তাবেঈ এটাকে হালাল মনে করতেন যেমন তাউস, আতা,সাঈদ বিন জুবাইর আর মাক্কার আধিকাংশ ফেকাহবিদ।
فأما ما ذكره عن أسماء فأخرجه النسائي من طريق مسلم القري قال دخلت على أمساء بنت أبي بكر فسألناها عن متعة النساء فقالت فعلناها على عهد رسول الله صلى الله عليه وسلم
যেমনটি আসমার থেকে বর্ণিত, ( ইমাম) নাসাঈ মুসলিম বিন কারি থেকে বর্ণনা করেছেন- আমারা আবু বকরের মেয়ে আসমা এর কাছে গেলাম এবং মহিলাদের সাথে মুত’আ এর ব্যপারে জিজ্ঞেস করলাম, সে বললেন রসুলের জামানাএ আমি এটা করেছি।
২) আল্লামা শওকানির প্রামান্য গ্রন্থ নীল আল আউতার  খণ্ড ৬ পাতা ৫৩, নিকাহ মুতাঃ
“ইবনে হযম তার আল মুহাল্লাতে ইবনে আব্বাস ছাড়াও সাহাবিদের একটা জামাত থেকে বর্ণনা করেছেন আর বলেছেন ‘এটা প্রমানিত যে সালাফদের একটা জামাতের কাছে এটা ( মুতা) হালাল ছিল, যেমন আসমা বিনতে আবি বকর, জাবির বিন আব্দুল্লাহ, ইবনে মাসুদ, ইবনে আব্বাস, মুয়াবিয়া, উম্রর বিন আল হুরায়িস, আবু সাইদ এবং সালাম বিন উমায়্যাহ বিন খালাফ.............................. আর তাবেঈদের মধ্যে যারা হালাল বলত যেমন তাউস, আতা এবং সাইদ বিন যুবাইর।
৩) ইবনে কাইউম তার এলাম আল মু’আকীন, খন্ড ৩ পাতা ৪৪ঃ
أَنَّ الْمُتْعَةَ أُبِيحَتْ فِي أَوَّلِ الْإِسْلَامِ، وَفَعَلَهَا الصَّحَابَةُ، وَأَفْتَى بِهَا بَعْضُهُمْ بَعْدَ مَوْتِ النَّبِيِّ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
-“মুতা হালাল ছিল ইসলামের প্রথম যুগে এবং সাহাবাগণ এটা করেছেন আর তাদের মধ্যে আনেকেই মুতা কে হালাল মনে করত এমনকি নবী সাঃ এর মৃত্যুর পরেও”।
অজুহাত ৯) ঈবনে আব্বাস শেষ জিবনে তার মুতা হালালের ফতোয়া থেকে সরে এসেছিল।
ঈবনে আব্বাস যে মুত’আর ফতোয়া থেকে সরে এসেছিলেন সেগুলি একেবারে ভ্রান্ত।
নিছে পমান দেওয়া হল।
সহিহ মুসলিমঃ আরবি হাদিস ২৫০৮
“উরুয়া বলেন আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর মক্কাতে উঠে দাঁড়ালেন ও ভাষণ দিলেন ‘ আল্লাহ কিছু লোকের হৃদয়কে অন্ধ করেদিয়েছেন যেমন তিনি তাদের চক্ষুকে অন্ধ করে দিয়েছেন, তারা মুতার পক্ষয়ে ফতয়া দিচ্ছে’ সে ( আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর) একজনার প্রতি ইঙ্গিত দিচ্ছিল( ইবনে আব্বাসের প্রতি)।ইবনে আব্বাস তাকে ডেকে বললেন ‘তুমি এক রুড় ব্যাক্তি ও জ্ঞানহী্ন- আমার জীবনের কসম, মুত্তাকিদের সরদারের সময় মুতা করা হত’। ইবনে যুবাইর বলল ‘তবে শুধু নিজের জন্য করো, আর সেটা করলে আমি তোমাকে পাথর মারব’।  
ইবনে যুবাইর ও ইবনে আব্বাসের মধ্যে  এই বিতর্ক কখন হয়েছিল?
সবার জানা মতে আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর, ইমাম হুসসাইন আঃ ও  অনান্য কিছু সাহাবী ইয়াযিদের বায়াত করেনি।
আর এর মধ্যে ইমাম হুসাইন আঃ কে ইয়াযিদ কারবালাতে শহীদ করে, আর তার পরে ইবনে যুবাইর মক্কাতে নিজের শাসন কায়েম করে। আর পরে ইয়াযিদের বাহিনী মক্কা আক্রমণ করে ইবনে যুবাইরকে হত্যা করে। সুতারং এই বিতর্ক কম পক্ষে ৬১ হিজরির পরে হয়েছে। বুড়ো বয়েসে ইবনে আব্বাস দৃস্টিশক্তি হারিয়ে ফেলেন। ইবনে আব্বাসের মৃত্যু ৬৮ হিঃ তে হয়েছিল।

ইবনে তাইমিয়ার ছাত্র ইবনে কাইউম তার ‘জাদ আল মাদ’ এর খণ্ড ২ পাতা ১৯০ তে লিখেছেনঃ
“অব্দুর রাজ্জাক বলেছেন মামুর, আউবের থেকে বর্ণনা করেছেন উরুয়া ইবনে আব্বাসকে বলল ‘তুমি কি আল্লাহকে ভয় করোনা যে মুত’আ কে অনুমতি দিচ্ছো’? ইবনে আব্বাস উত্তর দিল ‘তোমার মা কে জিজ্ঞেস করো’.........”। 
ইবনে হাজর আস্কালানি তার ‘তালখিয আল হাবির’ বইয়ের খন্ড ৩ পাতা ১৫৯ এ লিখেছেন-

“যেমনটি আসমার থেকে বর্ণিত, ( ইমাম) নাসাঈ মুসলিম বিন কারি থেকে বর্ণনা করেছেন- আমারা(একদল তাবেইদের জামাত) আবু বকরের মেয়ে আসমা এর কাছে গেলাম এবং মহিলাদের সাথে মুত’আ এর ব্যপারে জিজ্ঞেস করলাম, সে বললেন রসুলের জামানাএ আমি এটা করেছি”
মুসনাদে আবি দাউদ তিলিয়াসি লিখেছে এই একই হাদিস লিখেছেন। খন্ড ৩ পাতা ২০৮ ।
আরও প্রমানঃ
ইমাম বাগভী তার তাফসেরে এই আয়াতের প্রসঙ্গেঃ
وكان ابن عباس رضي الله عنهما يذهب إلى أن الآية محكمة، ويُرخِّص في نكاح المتعة.
“ইবনে আব্বাস বলত এই আয়াত ‘মুহকামাহ’ আর এটা মুতা বিয়েকে অনুমতি দেয়”।
তাফসেরে খাজানে ইবনে আব্বাস থেকে বর্ণনা করা হয়েছে-
“এটা ‘মুহকামাহ’ আর এটা মুতা বিয়েকে অনুমতি দেয়”।
فروي عنه أن الآية محكمة وكان يرخص في المتعة
মুহকামাহ সেই আয়াত গুল্কে বলা হয় যে গুলি রহিত হয়নি।
মুকামাহ মানে কি আহলে সুন্নার ইমাম মানাবি তার ফাইয আল কাদীর ( খন্ড ৪ পাতা ৫০৮) এ লিখছেনঃ
آية محكمة أي لم تنسخ
“ আয়াতে মুহাকামাহ ঐগুলো যেগুলি রহিত হয়নি”।

সুন্নি হাদিসবিদ ও আলেমদের মতে ইবনে আব্বাসের নামে যেগুলো বলা হয় যে তিনি মুতার ফতোয়া থেকে পরে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিল সেগুলি সব দুর্বল ও পরিত্যক্ত।

১) ফাতহূল বারী সারাহ সাহিহ বুখারি , ইবনে হাজর আস্কালানি, হাদিসবিদ ইবনে বাত্তাল থেকে বর্ণনা করেছেনঃ খণ্ড ৯ পাতা ১৫০।
قَالَ اِبْن بَطَّال : رَوَى أَهْل مَكَّة وَالْيَمَن عَنْ اِبْن عَبَّاس إِبَاحَة الْمُتْعَة ، وَرُوِيَ عَنْهُ الرُّجُوع بِأَسَانِيد ضَعِيفَة وَإِجَازَة الْمُتْعَة عَنْهُ أَصَحّ
“মক্কা ও ইয়ামানের লোকেরা ইবনে আব্বাসের থেকে মুত’আর অনুমতির বিষয় বর্ণনা করেছেন, আর তাঁর (ইবনে আব্বাসের) মত পরিবর্তনের বর্ণনা জাইফ( দুর্বল)। কিন্তু তাঁর মুতার অনুমতির বর্ণনা সহিহ”
২) সালাফি দের প্রিয় আলেম শাওকানি তাঁর ‘নীল আল আউতার’ এ উপরের একই কথা লিখেছেন।খন্ড ৬ পাতা ২৭১।
৩) সালাফি ওয়াহাবি ও জামাতি দের সবথেকে প্রিয় হাদিসবিদ আলবানী এরয়া আল ঘলিল খণ্ড ৬ পাতা ৩১৯ঃ
وجملة القول : أن ابن عباس رضي الله عنه روي عنه في المتعة ثلاثة أقوال : الأول : الاباحة مطلقا . الثاني : الاباحة عند الضرورة . والآخر : التحريم مطلقا وهذا مما لم يثبت عنه صراحة بخلاف القولين الأولين فهما ثابتان عنه . والله أعلم
“ইবনে আব্বাস থেকে মুতার ব্যাপারে যে বর্ণনা করা হয়েছে সেটাতে তিনটি অপশন আছেঃ
-তিনি পরিপূর্ণ ভাবে মুতার অনুমতি দিয়েছেন।
- তিনি প্রয়োজনের সময় মুতার অনুমতি দিয়েছেন। 
- তিনি সম্পূর্ণ মুতার (ফতোয়াকে) পরিত্যগ করেছিলেন- আর এইটা প্রমানিত নয়, উপরের দুটি বক্তব্যএর বিরুদ্ধে, যেখানে উপরের দুটি তাঁর থেকে প্রমাণিত"।   
দ্বিতীয় পর্বে আমি হাদিস সমূহের আলচনা করব।
যেহেতু এটা পরিষ্কার ভাবে প্রমাণিত যে রাসুলের মুত’আ এর প্রচলন করেছিলেন, তাই আমি দুটি হাদিস সমুহ উল্লেখ করবো যেখানে মুত’আ এর নির্দেশ/অনুমতি রসুল সঃ দিচ্ছেন।  
১)আব্দুল্লাহ (ইবন মাসুদ) বর্ণনা করেছেন যে –আমরা রসুলের সাথে পবিত্র যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতাম, আর আমাদের সাথে কেউ ( স্ত্রী) থাকত না।সুতারং আমরা বললাম যে আমরা কি হিজড়াদের নিতে পারি? তিনি এটা বারন করলেন, কিন্তু আমাদের মহিলাদের সাথে মুত’আ কারার আনুমতি দিলেন।এবং এটা পড়লেন ‘...ও যারা তোমরা বিশ্বাস করো( ইমানদার) আল্লাহ্‌ যে ভালোগুলি তোমাদের জন্য হালাল করেছেন তা হারাম করো না, কিন্তু সীমা লঙ্ঘন করো না’।(৫:৮৭)
Sahih Bukhari :USC-MSA web (English) reference : Vol. 7, Book 62, Hadith 13
Sahih Muslim :USC-MSA web (English) reference : Book 8, Hadith 3243
২)জাবির বিন আব্দুল্লাহ ও সালামা বিন আকঅয়া বলেন রসুল সঃ আমদের কাছে এলেন ও আমাদেরকে (মহিলাদের থেকে) লাভবান হতেনির্দেশ  দিলেন। অর্থাৎ মুত’আ এর অনুমতি দিলেনে।
Sahih Muslim: USC-MSA web (English) reference : Book 8, Hadith 3247
এখন আমি সেই হাদিসগুলি উল্লেখ করবো যে খানে বর্ণিত হয়েছে যে রসুল পাক সাঃ মুত’আ কে পরে নিষিদ্ধ করে দিয়েছিলেন। এবং তাঁর আলচনা করবো।
প্রথমে যে হাদিসটা আহলে সুন্নার ভাইরা উল্লেখ করেন।
১)মুসলিম শরিফঃ আলি, ইবনে আব্বাসকে বললেন যে খাইবারের ( যুদ্ধের) দিন আল্লহের রসুল মুত’আ আর গৃহপালিত গাধার মাংস খাওয়া চিরকালের জন্য হারাম করেছেন।
USC-MSA web (English) reference : Book 8, Hadith 3265
Book #008, Hadith #3265)
(Book #008, Hadith #3266)
(Book #008, Hadith #3267
এই হাদিসের প্রসঙ্গে একটু আলচনা করে নেওয়া দরকার। খাইবারএর যুদ্ধে জয়লাভের দিন সন্ধ্যায় রসুল সাঃ নিজের তাবু থেকে বার হয়ে দেখলেন যে চারিদিকে ছোট ছোট  আগুন জ্বালিয়ে কিছু রান্না হচ্ছে, নবী সঃ জিগ্যেস করলেন যে ব্যপারটা কি? যখন অবগত হলেন যে গাধার গোস্ত রান্না হচ্ছেন তখন তিনি বললেন যে গৃহপালিত গাধার গোস্ত খাওয়াকে হারাম করা হয়েছে। তখন যারা রান্না করছিলেন হাঁড়িগুলি উলটিয়ে দিলেন।
এখন প্রশ্ন এই পরিস্থিতিতে তিনি মুত’আ কে কেনো আনবেন, যেটা আপ্রসঙ্গিক।
দেখুন এখানে আমি খাইবার এর এইঘটনার অন্যান্য হাদিস সংক্ষেপে তুলে ধরছি, যে খানে অন্য কোন সাহাবী মুত’আর কথা বলনি।
বুখারি থেকেঃ
১)সাহাবী ইবনে আবি আউফা “............গাধার মাংস খাওয়া চিরকালের জন্য বারন করেছেন” (Book#53, Hadith #383)
২) সাহাবী আনাস “...... গাধার মাংস খেতে বারন করেছেন”। (Book #59, Hadith #510)
৩) সাহাবী ইবন উমার “......খাইবারের দিন গাধার মাংস খেতে নিসেদ করেছেন। .  (Book #59, Hadith #528)
৪) সাহাবী জাবির বিন আব্দুল্লাহ “খাইবারের দিন আল্লাহের রসুল গাধার মাংস খেতে নিষিদ্ধ করেছেন......”।
(Book #59, Hadith #530)
৫) সাহাবী আল বারা বিন আযাইব “খাইবারের যুদ্ধের সময় রসুল সঃ গাধার মাংস ফেলে দিতে নির্দেশ দেন- রান্না করা বা কাঁচা...”
(Book #59, Hadith#535)
৬)সাহাবী আল বারা ও ইবনে আবি আউফা ঃ “খাইবারের দিন যখন রান্নার পাত্র আগুনের উপর ছিল, রসূল সাঃ বললেন পাত্রগুল উল্টে দাও”
(Book #59, Hadith #533)
৬) ইবনে উমার “ খাইবারের যুদ্ধের দিন রসুল সঃ রসুন আর গাধার মাংস খাওয়া বারণ করেছেন”।
(Book #59, Hadith #526)
আমার সংগ্রহতে এই মুহূর্তে ১১ টা হাদিস খাইবার সম্মন্ধে আছে মুসলিম আর বুখারি থেকে। এখানে দেখা যাচ্ছে মোট ৬ জন সাহাবী খাইবারের এই ঘটনা উল্লেখ করেছেন। সবাই শুধু গাধার মাংসের হারামের কথা বলেছেন- এক মাত্র আলি আঃ থেকে গাধার মাংস এর সাথে মুত’আ হারাম হওয়ার কথা উল্লেখ হয়েছে। সুতরাং আলি আঃ থেকে বর্ণিত হাদিস নিঃসঙ্গ হাদিস। যেটা অন্য ৫ জনের থেকে আলাদা আর এইখানেই উক্ত বর্ণনার ( আলি আঃ এর থেকে মুত’আ হারামের বর্ণনা) দুর্বল হয়ে যাওয়া প্রমাণিত হয়ে।
মজার বিষয় যে লক্ষ্য করুন ৬ নং হাদিসটাতে যেখানে এই খাইবারে রসুন খাওয়াকে গাধার মাংসের মত হারাম করেছে-অথচ উম্মাতের কেউ বুখারির এই হাদিসটা মানে বলে আমি দেখেনি, যদি কেউ দেখে থাকেন তাবে  বলতে পারেন. বরং রসুন আর পেয়াজ দিয়ে ঈদের গোস্ত রান্না না করলে মজাই থাকে না
যাইহোক উপরের আলচনা থেকে এটা বোঝা গেল যে মুতা’আ নিশেদ হাদিসটার মান কতো টুকু।
দ্বিতীয়ত আমি পাঠকবৃন্দকে মুতা’আ হারামের হাদিসটি আবার পড়ার জন্য এখানে উল্লখ করলাম, নিচের আলচনাতে পরিষ্কার হুএ যাবে যে হাদিসটা বানানো।
“...আলি, ইবনে আব্বাসকে বললেন যে খাইবারের ( যুদ্ধের) দিন আল্লহের রসুল মুত’আ আর গৃহপালিত গাধার মাংস খাওয়া চিরকালের জন্য হারাম করেছেন।
এই হাদিসে মুত’আকে চিরকালের জন্য হারাম করা হয়েছে!  খাইবারের যুদ্ধ হয়েছিল ৬স্ট হিজরিতে।
অথচ ৭ম হিজরিতে উমরাতুল ক্বাযা এর সময় আবার মুতার অনুমতি হচ্ছে আর চিরকালের জন্য বারণ হচ্ছে!!
ইবনে হাজর আস্কালানি তার তালখিজ আল হাবির এর খণ্ড ৪ বিষয় নং ১০৬৩ তেঃ ইবনে হাজর আস্কালানি এই হাদিস কে হাসান সাবিত করেছেন।
قال عبد الرزاق في مصنفه عن معمر عن عمرو عن الحسن قال ما حلت المتعة قط إلا ثلاثا في عمرة القضاء ما حلت قبلها ولا بعدها وشاهده ما رواه بن حبان في صحيحه من حديث سبرة بن معبد قال خرجنا مع رسول الله صلى الله عليه وسلم فيا قضينا عمرتنا قال لنا ألا تستمتعوا من هذه النساء
“আব্দুর রাজ্জাক তার মুসান্নাফ এ হাসান থেকে বর্ণনা করেছেন মুতা না উমরাতুল ক্বাযা এর আগে হালাল ছিল আর না পরে”
এখন ৬স্ট হিজরিতে যদি মুত’আ চিরকালের জন্য হারাম হয়ে ৭ হিজরিতএ বর্ণনা হচ্ছে যে না তার আগে মুতা হালাল ছিল আর না তার পরে হালাল ছিল!!
   উপরে দুবার ৬য় ও ৭ম হিজরিতে মুতা চিরকালের জন্য হারাম হলে  তবে ৮ম হিজরিতে মক্কা বিজয়ের সময় সাহাবীরা আবারও কিভাবে মুত’আ করেন আর রসুল পাক সাঃ কিভাবে অনুমতি দেন?
মক্কা বিজয়ের সময় রসুল পাক সাঃ মুতা’আর অনুমতি দিয়েছিলেন এই বিষয় বেশ কিছু হাদিস আছে আমি  দু-একটা সাহিহ মুসলিম থেকে তুলে ধরছি।
প্রথম হাদিসঃ
“সবরাল জুহান্নি তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন যে আল্লাহের রসুল (মক্কা) বিজয়ের বছরে মুত’আ করার অনুমতি দিয়েছিলেন, যখন আমরা মক্কাতে প্রবেশ করেছিলাম, এবং এর থেকে বার হয়েছিলাম রসুল এটাকে( মুত’আ) করতে নিশেদ করেছিলেন যখন”
দ্বিতীয় হাদিসঃ
রাবি বিন সাবরা বলেছেন যে তার পিতা রসুলের সাথে মক্কা বিজয়ের সময় যুদ্ধে গিয়েছিলেন। সেখানে আমরা ১৫ দিন ছিলাম আর আল্লহের রসুল আমাদের মুত’আ করার অনুমতি দিয়েছিলেন...........................সুতারং আমি তার (একটা মেয়ে) সাথে মুত’আ করলাম, এবং ততক্ষণ পর্যন্ত এর থেকে ( মুত’আর থেকে) বার হয় নি যতক্ষণ না রসুল সাঃ এটাকে নিশেদ করলেন।
আহলে সুন্নার হাদিস আনুযাই ৬স্ট ও ৭ম হিজরিতে মুত’আ চিরকালের জন্য  হারাম হয়ে গিয়েছে অথচ ৮ম হিজরিতে রসুল মুত’আ করার অনুমতি দিচ্ছেন!
আরও মজার বিষয় এই ৮ম হিজরিতে মক্কা বিজয়ের সময় সুন্নি হাদিস আনুজাই রসুল সাঃ মুত’আ কে আবার চিরকালের জন্য হারাম করছেন(!) দেখুন নিছের হাদিস মুসলিম শরীফ থেকে। উপরের প্রথম হাদিস যিনি বর্ণনা করেছেন তার থেকেই হাদিস।
“সাবরাল জুহান্নি তার পিতার থেকে বর্ণনা করেছেন যে রসুল সঃ মুত’আ করতে বারণ করেছেন আর বলেছেন যে এটা হারাম আজ থেকে কেয়ামত পর্যন্ত, যদি তোমরা কিছু( মোহর) দিয়ে থাকো তাবে তা ফেরত নিয় না”
প্রয় পাঠক এখনো আশ্চায্যের বাকি আছে। ৮ম-৯বম হিজরিতে আউতাসের (হুনাইন যুদ্ধের- মক্কা বিজয়ের পর) সময় রসুল সাঃ আবারও মুত’আ এর অনুমতি দিচ্ছেন!
সহিহ মুসলিম থেকেঃ
“ইলিয়াস বিন সালামা তার পিতার সুত্রে বর্ণনা করেছেন যে আল্লাহের রসুল সাঃ আউতাসের বছরে ( হুনাইন এর সময়) তিন দিনের জন্য মুত’আ করার অনুমতি দিয়েছেন তার পরে তিনি এটাকে নিশেদ করেলেন”
USC-MSA web (English) reference: Book 8, Hadith 325
অনুরূপ ভাবে হাদিস অনুযাই প্রমান পাওয়া যায় সাহাবীগন রসুলের অনুমতিতে ৯ম হিজরিতে তাবুকের সময় মুত’আকে অনুমতি দিচ্ছেন আবার চিরকালের জন্য হারাম করছেন!
আবার ১০ম হিজরিতে  বিদায় হজের সময় রসুল মুত’আ কে হারাম করছেন।
আশ্চায্যের বিষয়  সুন্নি হাদিস অনুসারে রসুল সাঃ একবার হালাল আবার ছিরকালের জন্য হারাম আবার হালাল আবার হারাম আবার হালাল আবার হারাম ...ইত্যাদি করতেই থেকেছেন। এটা রসুলের সাঃ এর উপর অস্থির মস্তিষ্কের ( fickle mind) আরোপ ছাড়া কিছু নয়ে। এঁরা রসুল সঃ কে এমন দেখতে চেয়েছেন যে তিনি কি করেন সেটা নিজেও জানেন না, কি বলেছেন আর কখন কি হারাম করেছেন তা নিজেও ভালো করে জানেন না।
আসলে তা নয়- আমাদের প্রয় নবী সাঃ এই সব থকে মুক্ত। রসুল এই ধরেনে  পরস্পর বিরোধী আত্ম বিরোধী থেকে মুক্ত।
এই মুত’আ হারামের হাদিস  মানুষ বানিয়েছে তাই এর মধ্যে এত বৈপরিত্ত (contradiction)
আল্লাহ্‌ ও তার রসুলের বানির মধ্যে কোন বৈপরিত্ত নেই, কুরআনে দেখুন-
তোমরা কি কুরআনের উপর চিন্তা করোনা? যদি এটা আল্লাহ্‌ ব্যতিত অন্য কারও থেকে আসতো তোমরা এর মধ্যে অনেক বৈপরিত্ব দেখতে পেতে।(৪:৮২)

তৃতীয় অংশে আমি সাহিহ হাদিস ও বর্ণনাথেকে এটা প্রমান করবো যে মুত’আ দ্বিতীয় খলীফা উমার এটাকে নিশেদ করেছেন।
এক্ষেত্রে আমি প্রথমে সহিহ হাদিস থেকে দুটি হাদিস তুলে ধরতে চাই।
১)সহি মুসলীম:  ইবনে উরাইজ বর্ণিত: আতি বর্ণিত যে জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ উমরা পালনের জন্য আসল এবং আমরা কিছু লোক তার কাছে গেলাম ও বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তখন তিনি বললেন- আমরা নবীর আমলে সাময়িক বিয়ে করে আনন্দ করতাম ও এটা আবু বকর ও ওমরের আমল পর্যন্ত চালু ছিল।

২) সহি মুসলীম: জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ বর্ণিত: সামান্য কিছু খাদ্য বা অন্য কিছুর বিনিময়ে আমরা নবীর আমলে সাময়িক বিয়ে করতাম, এটা আবু বকরের আমলেও আমরা এটা করতাম তবে ওমর এটা নিষেধ করে দেন।
৩) মুসনদ আহমাদ বিন হাম্বালঃ আবু নাদরা বর্ণনা করেছেন, আমি জাবির বিন আব্দুল্লাহকে বললাম যে ইবনে যুবাইর মুত’আকে বারণ করেছেন আর ইবনে আব্বাস এটার অনুমতি দিচ্ছেন, তিনি ( জাবির) বললেন যে আমিই এই হাদিস বলেছি, আমরা রসুল সাঃ এবং আবু বকরেরে সাথে থেকে মুত’আ করেছি, যখন উমার খলিফা হলেন তিনি জনগণকে উদেশ্যে বললেন ‘কুরআন সেই কুরআন, রসুল সেই রসুল এবং আল্লাহের রসুলের সময় দুই ধরণের মুত’আ ছিল একটা মুত’আ আল হাজ্জ আর অন্যটা মুত’আ আন নিসা ( মেয়েদের সাথে মুত’আ)।
৪) উপরের হাদিসটা সাহিহ আল মুসলিম এ উল্লেখ হয়েছে কিছু শব্দের/বাক্যের পরিবর্তন এ, আর শেষে এই টুকু অংশ বর্ধিত আকারে “.............................. কনো কাউকে যদি মুত’আ করা লোককে আমার কাছে নিয়ে আসলে টাকে পাথর মারা মারা হবে”।
৫) কানযুল আম্মালঃ উমার ( বলেছেন) দুই ধরনের মুত’আ আল্লাহের রসুলের সময় চালু ছিল, আমি দুটোকেই নিষিদ্ধ করছি, মুত’আ নিসা ও মুত’আ হাজ্জ।
আরও কিছু রেফারেন্স এখানে উল্লেখ করা হল।
৬) তাফসির আল কবির –ইমাম ফখরুদ্দিন রাজী।– উমার বললেন দুটো মুত’আ রসুলের সময় ছিল, আমি এদুটো নিষিদ্ধ করছি।
৭) তফসীর এ দুররুল মনসুর- জালালুদ্দিন সুয়ুতিঃ ইবনে আব্বাস বলেন, মুত’আ আল্লাহের তরফ থেকে মুহাম্মাদের উম্মাতের জন্য রহমত স্বরূপ, যদি উমার এটাকে না নিষিদ্ধ করতো তবে জঘন্য ব্যক্তি ছাড়া কেউ জেনা করত না।
ইমাম আলি আঃ এটা বলেছেন ইবন আব্বাস এখানে ইমাম আলি আঃ এর উক্ত কথা  তুলে ধরছেন।
৮) মুসনাদে আহমাদ ইবন হাম্বাল حَدَّثَنَا عَبْدُ الصَّمَدِ، حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، عَنْ عَاصِمٍ، عَنْ أَبِي نَضْرَةَ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ: " مُتْعَتَانِ كَانَتَا عَلَى عَهْدِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَنَهَانَا عَنْهُمَا عُمَرُ، فَانْتَهَيْنَا "
জাবির ( ইবন আব্দুল্লাহ আনসারী) নবী সাঃ এর সময়ে দুটো মুত’আ ছিল উমার এদুটোকে বারণ করে দিলেন, উমার ( বললেন) আমি এই দুটো কে মানা করছি।ফলে আমরা বিরত থাকলাম।
 সহিহ এবং মুতাওাতির বর্ণনা থেকে উমার মুত’আকে নিষিদ্ধ করেছিলেন তার প্রমান হয়ে, ফলে আহলে সুন্নার উলেমাগন উমারকে রক্ষ্যা করার জন্য খোঁড়া যুক্তি নিয়ে এসেছে। সেই গুলির কিছু উল্লেখ করা হল।
১) আসলে মুত’আ নবী সাঃ নিষিদ্ধ করেছিলেন, যে হেতু সাহাবাগন সাবাই জানত না তাই তারা মুত’আ করত, উমার শুধু মাত্র রসুলের নিষিদ্ধটাকে প্রয়োগ করেছেন।
--- একটা মিথ্যাকে কোন সময় ঢাকা যায়ে না, যদি বলা হয় যে সাহাবীরা জানত না তবে এটা অনেক বড় বড় (সুন্নিদের চোখে) সাহাবিদের উপর অভিযোগ এসে যায়ে। যেমন ইবনে আব্বাস, জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ আলআনসারী আরও আনেকের উপর, আরও অভিযোগ এসে যায়ে আবু বকর এর উপর কারণ তার খেলাফত এর সময় তিনি মুত’আ চালু রেখেছিলেন, তবে আবু বকর ও রাসুলের সাঃ –এর মুত’আ নিষিদ্ধ –এর কথা জানত না?
দ্বিতীয়ত উমারের মুত’আ নিষিদ্ধের সবকটি হাদিসে এ কথা বলা হচ্ছে যে মুত’আ রসুলের জীবদ্দশায়ে চালু ছিল, আর সবথেকে বড় কথা যে উমার নিজে বলছেন যে রসুলের সময় ছিল, আমি এটাকে নিষিদ্ধ করছি। উমার নিজে বলছেন যে তিনি নিষিদ্ধ করছেন।
 আমি আলচনা শেষ করছি এ কথার খণ্ডন করে যে মুত’আ জাহিলি যুগের বিবাহের একটা রীতি ছিল, রসুলে ধীরে ধীরে এটা কে নিষিদ্ধ করেছিলেন।
উপরের আলচনা থেকে এটা প্রমানিত হয়েছহে যে কুরআনের আয়াত দ্বারা ও রসুলের পবিত্র বানী দ্বারা মুত’আ এর প্রচলন হয়েছে, জাহিলি যুগের এই বিয়ে ছিল না।
সহিহ আল বুখারিঃ
قَالَ: أَخْبَرَنِي عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ، أَنَّ عَائِشَةَ، زَوْجَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَخْبَرَتْهُ: أَنَّ النِّكَاحَ فِي الجَاهِلِيَّةِ كَانَ عَلَى أَرْبَعَةِ أَنْحَاءٍ: فَنِكَاحٌ مِنْهَا نِكَاحُ النَّاسِ اليَوْمَ: يَخْطُبُ الرَّجُلُ إِلَى الرَّجُلِ وَلِيَّتَهُ أَوِ ابْنَتَهُ، فَيُصْدِقُهَا ثُمَّ يَنْكِحُهَا، وَنِكَاحٌ آخَرُ: كَانَ الرَّجُلُ يَقُولُ لِامْرَأَتِهِ إِذَا طَهُرَتْ مِنْ طَمْثِهَا: أَرْسِلِي إِلَى فُلاَنٍ فَاسْتَبْضِعِي مِنْهُ، وَيَعْتَزِلُهَا زَوْجُهَا وَلاَ يَمَسُّهَا أَبَدًا، حَتَّى يَتَبَيَّنَ حَمْلُهَا مِنْ ذَلِكَ الرَّجُلِ الَّذِي تَسْتَبْضِعُ مِنْهُ، فَإِذَا تَبَيَّنَ حَمْلُهَا أَصَابَهَا زَوْجُهَا إِذَا أَحَبَّ، وَإِنَّمَا يَفْعَلُ ذَلِكَ رَغْبَةً فِي نَجَابَةِ الوَلَدِ، فَكَانَ هَذَا النِّكَاحُ نِكَاحَ الِاسْتِبْضَاعِ. وَنِكَاحٌ آخَرُ: يَجْتَمِعُ الرَّهْطُ مَا دُونَ العَشَرَةِ، فَيَدْخُلُونَ عَلَى المَرْأَةِ، كُلُّهُمْ يُصِيبُهَا، فَإِذَا حَمَلَتْ وَوَضَعَتْ، وَمَرَّ عَلَيْهَا لَيَالٍ بَعْدَ أَنْ تَضَعَ حَمْلَهَا، أَرْسَلَتْ إِلَيْهِمْ، فَلَمْ يَسْتَطِعْ رَجُلٌ مِنْهُمْ أَنْ يَمْتَنِعَ، حَتَّى يَجْتَمِعُوا عِنْدَهَا، تَقُولُ لَهُمْ: قَدْ عَرَفْتُمُ الَّذِي كَانَ مِنْ أَمْرِكُمْ وَقَدْ وَلَدْتُ، فَهُوَ ابْنُكَ يَا فُلاَنُ، تُسَمِّي مَنْ أَحَبَّتْ بِاسْمِهِ فَيَلْحَقُ بِهِ وَلَدُهَا، لاَ يَسْتَطِيعُ أَنْ يَمْتَنِعَ بِهِ الرَّجُلُ، وَنِكَاحُ الرَّابِعِ: يَجْتَمِعُ النَّاسُ الكَثِيرُ، فَيَدْخُلُونَ عَلَى المَرْأَةِ، لاَ تَمْتَنِعُ مِمَّنْ جَاءَهَا، وَهُنَّ البَغَايَا، كُنَّ [ص:16] يَنْصِبْنَ عَلَى أَبْوَابِهِنَّ رَايَاتٍ تَكُونُ عَلَمًا، فَمَنْ أَرَادَهُنَّ دَخَلَ عَلَيْهِنَّ، فَإِذَا حَمَلَتْ إِحْدَاهُنَّ وَوَضَعَتْ حَمْلَهَا جُمِعُوا لَهَا، وَدَعَوْا لَهُمُ القَافَةَ، ثُمَّ أَلْحَقُوا وَلَدَهَا بِالَّذِي يَرَوْنَ، فَالْتَاطَ بِهِ، وَدُعِيَ ابْنَهُ، لاَ يَمْتَنِعُ مِنْ ذَلِكَ «فَلَمَّا بُعِثَ مُحَمَّدٌ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِالحَقِّ، هَدَمَ نِكَاحَ الجَاهِلِيَّةِ كُلَّهُ إِلَّا نِكَاحَ النَّاسِ اليَوْمَ»
৪৭৫১ ইয়াহ্ইয়া ইবনু সুলায়মান ও আহমদ ইবনু সালিহ্ (রহঃ) উরওয়া ইবনু যুবায়র (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, তাকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সহধর্মিনী হযরত আয়িশা (রাঃ) বলেছেন, জাহিলী যুগে চার প্রকারের বিয়ে প্রচলিত ছিল। এক প্রকার হচ্ছে, বর্তমান যে ব্যবস্থা চলতে অর্থাৎ কোন ব্যাক্তি কোন মহিলার অভিভাবকের নিকট তার অধীনস্থ মহিলা অথবা তার কন্যার জন্য বিবাহের প্রস্তাব দিবে এবং তার মোহর নির্ধারণের পর বিবাহ করবে। দ্বিতীয়ত হচ্ছে, কোন ব্যাক্তি তার স্ত্রীকে মাসিক ঋতু থেকে মুক্ত হওয়ার পর এই কথা বলত যে, তুমি অমুক ব্যাক্তির কাছে যাও এবং তার সাথে যৌন মিলন কর। এরপর তার স্বামী নিজ স্ত্রী থেকে পৃথক থাকত এবং কখনও এক বিছানায় ঘুমাত না, যতক্ষণ না সে অন্য ব্যাক্তির দ্বারা গর্ভবতী হ, যার সাথে স্ত্রীর যৌন মিলন হত। যখন তার গর্ভ সুস্পষ্টবাবে প্রকাশ হত তখন ইচ্ছা করলে স্বামী তার স্ত্রীর সাথে সহবাস করত। এটা ছিল তার স্বামীর অভ্যাস। এতে উদ্দেশ্য ছিল যাতে করে সে একটি উন্নত জাতের সন্তান লাভ করতে পারে। এ ধরণের বিবাহকে নিকাহুল ইস্তিবদাবলা হত। তৃতীয় প্রথা ছিল যে, দশ জনের কম কতিপয় ব্যাক্তি একত্রিত হয়ে পালাক্রমে একই মহিলার সাথে যৌনমিলনে লিপ্ত হত। যদি মহিলা এর ফলে গর্ভবতী হত এবং কোন সন্তান ভূমিষ্ট হওয়ার পর কিছুদিন অতিবাহিত হত, সেই মহিলা এ সকল ব্যাক্তিকে ডেকে পাঠাত এবং কেউই আসতে অস্বীকৃতি জানাতে পারত না। যখন সকলেই সেই মহিলার সামনে একত্রিত হত, তখন সে তাদেরকে বলত, তোমরা সকলেই জানো- তোমরা কি করেছ! এখন আমি সন্তান প্রসব করেছি, সুতরাং হে অমুক! এটা তোমারই সন্তান। ঐ মহিলা যাকে খুশি তার নাম ধরে ডাকত, তখন এ ব্যাক্তি উক্ত শিশুটিকে গ্রহণ করতে বাধ্য থাকত এবং ঐ মহিলা তার স্ত্রীরূপে গণ্য হত। চতুর্থ প্রকারের বিবাহ হচ্ছে, বহু পুরুষ একই মহিলার সাথে যৌন মিলনে লিপ্ত হত এবং ঐ মহিলা তার কাছে যত পুরুষ আসত, কাউকে শয্যা-শায়ী করতে অস্বীকার করত না। এরা ছিল বারবনিতা (পতিতা), যার চিহ্ন হিসাবে নিজ ঘরের সামনে পতাকা উড়িয়ে রাখত। যে কেউ ইচ্ছা করলে অবাধে এদের সাথে যৌন মিলনে লিপ্ত হতে পারত। যদি এ সকল মহিলাদের মধ্য থেকে কেউ গর্ভবতী হত এবং কোন সন্তান প্রসব করত তাহলে যৌন মিলনে লিপ্ত হওয়া সকল কাফাহ্ পুরুষ এবং একজন কাফাহ্’ (এমন একজন বিশেষজ্ঞ, যারা সন্তানের মুখ অথবা শরীরের কোন অঙ্গ দেখে বলতে পারত- অমুকের ঔরসজাত সন্তান)-কে ডেকে আনা হত সে সন্তানটির যে লোকটি সাথে এ সাদৃশ্য দেখতে পেত তাকে বলত, এটি তোমার সন্তান। তখন ঐ লোকটি ঐ সন্তানকে নিজের হিসাবে অস্বীকার করতে পারত না। যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে সত্য দ্বীনসহ পাঠানো হল তখন তিনি জাহেলী যুগের সমস্ত বিবাহ প্রথাকে বাতিল করে দিলেন এবং বর্তমানে প্রচলিত শাদী ব্যবস্থাকে স্বীকৃতি দিলেন।
সুতরং উপরের হাদিস দ্বারা যারা বলেন যে মুত’আ জাহিলি যুগের একটা রীতি ছিল তাদের কথা রহিত হয়ে যায়ে কারণ এখানে আয়শা চার ধরনের বিবাহের পূর্ণ আলচনা করেছেন।

ইউটিউবে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের চ্যানেলটি

Share This
Previous Post
Next Post

0 comments: