Saturday, August 29, 2015

আইসিস ইসলামিক ষ্টেট সম্পর্কে মহানবীর (সাঃ) ভবিষ্যতবাণী

আইসিস  ইসলামিক  ষ্টেট  সম্পর্কে  মহানবীর (সাঃ)  ভবিষ্যতবাণী
মূল -শায়খ  হামযা  ইউসুফ
অনুবাদ-ডাঃ  বশীর  মাহমুদ  ইলিয়াস
তিরমিজী  শরীফের  হাদিস (২১৩৭),  হোযায়ফা  (রাঃ)  বলিয়াছেন,  রাসুলে  পাক  (সাঃ)  একদিন  ফজরের  নামাজ  থেকে  শুরু  করিয়া  মাগরিবের  নামাজ  পর্যন্ত  পৃথিবীতে  কেয়ামত  পর্যন্ত  যত  ফেতনা  হানাহানি  হইবে,  তাহা  সবিস্তারে  বর্ণনা  করিয়াছেন ।  এইসব  ফেতনা  সংঘটিত  হওয়ার  স্থানের  নাম,  নেতার  নাম,  নেতার  পিতার  নামও  বলিয়াছেন ।  এমনকি  মাত্র  ৩০০  লোক  জড়িত  থাকিবে  এমন  ছোট  ছোট  ফেতনার  কথাও  নবী  করীম (সাঃ) উল্লেখ  করিয়াছেন ।  সাহাবায়ে  কেরামগণের  কেউ  কেউ  তাহা  স্মরণ  রাখিয়াছেন  আবার  কেউ  কেউ  তাহা  ভুলিয়া  গিয়াছেন।  বিশ্বনবী (সাঃ)  আইসিস  ইসলামিক  ষ্টেটওয়ালাদের  সম্পর্কেও  ভবিষ্যতবাণী  করিয়া  গিয়াছেন ।  নুরনবী (সাঃ)  বলিয়াছেন,  (ফেতনাবাজ)  এইসব  লোক  হইবে  নিম্নশ্রেণীর  ইতর  টাইপের ।  তাহাদের  হৃদয়  হইবে  লোহার  মতো  কঠিন ।  প্রতিপক্ষের  প্রতি  তাহারা  হইবে  নির্মম,  কোন  দয়ামায়া  প্রদর্শন  করিবে  না ।  ইহারা  মানুষকে  সত্যের  দিকে  আহ্বান  করিবে  অথচ  ইহারা  নিজেরাই  সত্যপন্থী  নয় ।  রাসুলে  পাক (সাঃ)  বলিয়াছেন,  ইহারা  মহিলাদের  মতো  বড়  বড়  চুল  রাখিবে ।  আইসিস / আইসিলের  লোকদের  ছবিতে  দেখিবেন,  ইহাদের  চুল  মহিলাদের  মতো  বড়  বড় ।  ইহারা  কালো  পতাকা  বহন  করে ।  কেননা  তাহারা  জানে  যে,  কেয়ামতের  পূর্বে  ইমাম  মাহদীর  সেনাবাহিনীতে  যোগ  দেওয়ার  জন্য  খোরাসান (আফগানিস্তান)  হইতে  কালো  পতাকাবাহী  একটি  বাহিনীর  কথা  হাদীসে  ভবিষ্যতবাণী  করা  হইয়াছে ।  কিন্তু  তাহারা  জানে  না  যে  কালো  পতাকাবাহী  সেনাবাহিনী  আছে  দুই  রকম ।  আব্বাসীয়  বংশের  লোকেরা  যেই  সেনাবাহিনীর  সাহায্যে  উমাইয়াদের  উৎখাত  করিয়া  খেলাফত  দখল করিয়াছিল,  তাহাদের  বাহিনীও  কালো  পতাকা  বহন  করিত ।  এইসব  হানাহানি  খুনখারাবিতে  যাহারা  নেতৃত্ব  দেয়,  তাহাদের  নাম  সাধারণত  আবু  অমুক  বাগদাদী,  আবু  অমুক  মাগরেবী,  আবু  অমুক  আম্বারী  ইত্যাদি  ধরনের  হইয়া  থাকে ।  কারণ  এসব  অপরাধীরা  সাধারণত  তাহাদের  আসল  পরিচয়  গোপন  রাখে ।  এই  কারণে  ফেতনাবাজরা  কখনও  নিজেদের  গোত্রে  কখনও  ফেতনা  সৃষ্টি  করে  না ।  আরবের  সমাজ  ব্যবস্থা  চলে  গোত্রকে  ভিত্তি  করিয়া ।  নিজেদের  সুবিধার্থে  তাহারা  শহরে  যাইয়া  অরাজকতা  সৃষ্টি  করে  যেখানে  কেউ  তাহাদের  আসল  পরিচয়  জানে  না ।  এই  জাহেল  মূর্খরা  কোরআন  শরীফে  খুলিয়া  পড়িতে  থাকিবে  এবং  বলিবে  এই  তো  পেয়েছি,  এখানে  শুলে  চড়ানোর  কথা  আছে ।  কাজেই  আমাদের  বিরোধীতাকারীদের  শুলে  চড়াইয়া  হত্যা  কর ।  এই  বির্বোধরা  ফটাফট  ফতোয়া  দিয়ে  দেয়  অথচ  স্বয়ং  সাহাবায়ে  কেরামগণ  ফাতওয়া  দিতে  ভয়  পাইতেন ।  বড়  বড়  গবেষক  ইমামগণ  ফতওয়া  দিতে  ভয়ে  কাপিয়া  উঠিতেন ।  ইহারা  নিজেরাও  আলেম  নয়  আর  তাহাদের  নেতৃত্বেও  কোন  আলেম  নাই ।  ওলামায়ে  কেরামগণ  এদের  বিরুদ্ধে  কিছু  বলিলে  তাহারা  আলেমদেরকে  শাসকদের  দালাল  হিসাবে  অভিযুক্ত  করে । 
বোখারীর  শরীফের  হাদীস  দেখুন,  রাসুলুল্লাহ  (সাঃ)-কে  জিজ্ঞাসা  করা  হইল,  যদি  আমি  এমন  অবস্থার  সম্মুখীন  হই  যখন  মুসলমানদের  কোন  খলিফা  বা  ইমাম  না  থাকে  এবং  মুসলমানদের  কোন  সঠিক  দলও  না  থাকে,  তখন  আমি  কি  করিব ?  মহানবী (সাঃ)  বলিলেন,  নিজের  মুক্তির  জন্য  চেষ্টা  করিবে ।  (প্রয়োজনে  ঈমান  রক্ষার  জন্য  দূরবর্তী  জঙ্গলে  যাইয়া)  দাঁত  দিয়া  গাছের  শিকড়  কামড়াইয়া  পড়িয়া  থাকিবে  যতক্ষন  না  আল্লাহর  সাথে  মিলিত  হও (অর্থাৎ  মৃত্যু  হয়) ।  কিন্তু  নবী  করীম  (সাঃ)  কখনও  বলেন  নাই  যে,  খিলাফত  কায়েম  করা  ফরজে  কেফায়া (সামষ্টিক  কর্তব্য),  কেউ  যদি  খেলাফত  কায়েমে  এগিয়ে  না  আসে,  তবে  তোমাকে  একাই  খিলাফত  কায়েমের  চেষ্টা  করিতে  হইবে  ইত্যাদি  ইত্যাদি ।  এখন  যাহারা  খেলাফত  কায়েমের  দাবী  করিতেছে,  নিজেকে  খলিফা  বলিয়া  দাবী  করিতেছে,  এদের  সাথে  ইসলামের  কোন  সম্পর্ক  নাই ।  মহানবীর (সাঃ)  আদর্শ  সম্পর্কে  এদের  কোন  জ্ঞানই  নাই ।  মহানবী (সাঃ)  তরুণ-যুবকদেরকে  জিহাদে  যাওয়ার  পরিবর্তে  পিতা-মাতার  সেবাযত্ন  করিতে  আদেশ  দিয়াছেন ।  অথচ  এখনকার  নির্বোধ  তরুণরা  পিতামাতার  বিনা  অনুমতিতে  বাড়ি  থেকে  পালাইয়া  গিয়া  তথাকথিত  জিহাদে  যোগ  দিতেছে ।  এসব  বাদ  দিয়ে  হাসপাতাল  তৈরী  করুন,  ডাক্তার  হউন,  মানুষের  সেবা  করুন ।  জঙ্গলে  গিয়ে  ওরাঙ  ওটাঙের  সেবা  করুন ।  ইহারা  বর্তমানে  বিলুপ্ত  প্রায়  প্রজাতি ।  বিশ্বাস  করুন  কেয়ামতের  দিন  তাহারা  আপনার  পক্ষে  সাক্ষ্য  দিবে ।  আদিবাসীদের  নিকট  যান,  তাদের  সেবা  করুন।  খ্রীষ্টানরা  তাদের  সেবা  করে  খ্রীষ্টধর্মে  দীক্ষিত  করিতেছে ।  কখনও  কখনও  অগণিত  মানুষের  মতামতও  ভুল  হইতে  পারে  আবার  মাত্র  একজন  মানুষের  মতামতও  সঠিক  হইতে  পারে ।  হযরত  আবু  বকর  সিদ্দিকের  (রাঃ)  শাসন  আমলে  কিছু  সংখ্যক  মুসলমান  যখন  খলিফাকে  যাকাত  দিতে  অস্বীকার  করিল,  তখন  সকল  মুসলমানই  তাহাদের  পক্ষ  নিলেন ।  কিন্তু  একা  একমাত্র  আবু  বকর  সিদ্দিক (সাঃ)  তাদের  বিরুদ্ধে  রুখিয়া  দাড়াঁইলেন ।  পরবর্তীতে  দেখা  গেলো,  হযরত  আবু  বকর  সিদ্দিক (রাঃ)-এর  মতই  সঠিক  ছিল ।  মহানবী (সাঃ)  বলিয়াছেন, একজন  মুসলমানের  অধিকার  আছে  সে  যে-কোন  ব্যক্তিকে  নিরাপত্তা  দিতে  পারে ।  কিন্তু  (আইসিসের)  এই  লোকগুলোর  নবীজির (সাঃ)  সুন্নাহ  সম্পর্কে  কোন  ধারনা  নাই ।  একজন  অমুসলিম  হওয়া  সত্ত্বেও  রাসুলে  পাকের (সাঃ)  আদর্শ  সম্পর্কে  আমেরিকার  সেই  মহিলার  আরো  ভালো  জ্ঞান  আছে,  যাহার  ছেলেকে  ইরাকে  বন্দি  করা  হইয়াছে ।  সেই  নারী  ইউটিউবের  মাধ্যমে  বলিয়াছেন,  আমি  আপনাদের  ধর্ম  ইসলাম  সম্পর্কে  পড়াশোনা  করিয়াছি,  তাহাতে  বলা  হইয়াছে  একজনের  অপরাধের  জন্য  অন্যজন  শাস্তি  ভোগ  করিবে  না ।  আমেরিকার  পররাষ্ট্রনীতি  যাহা  করিয়াছে  তাহার  জন্য  আমার  ছেলে  দায়ী  নয় ।  আমি  আপনাদের  নবী  মোহাম্মদ  (সাঃ)  সম্পর্কে  পড়াশোনা  করিয়াছি,  তিনি  মানুষের  জন্য  সাধারণ  ক্ষমা  ঘোষণা  করিতে  ভালবাসিতেন ।  কাজেই  আমি  আমার  ছেলের  মুক্তি  চাই,  তাহাকে  ফেরত  চাই ।  আমি  জানি  তাহাদের  হাতে  মুসলমানদের  যত  ক্ষতি  হইতেছে  তাহা  পৈশাচিক  কিন্তু  তাহার  কেবল  খ্রীষ্টানদের  প্রসঙ্গ  উল্লেখ  করে ।  আমি  ব্যাপারটি  ভাল  করেই  উপলব্ধি  করিয়া  থাকি । 
আমাদেরকে  মনে  রাখিতে  হইবে  যে,  মুসলমানরা  যখন  মুসলমানদের  ক্ষতি  করে  তখন  কেবল  নিজেদেরই  ক্ষতি  করিল ।  কিন্তু  মুসলমানরা  যখন  অন্যায়ভাবে  অমুসলিমদের  ক্ষতি  করে  তাহাতে  কিন্তু  ইসলামেরই  ক্ষতি (বদনাম)  করা  হয় ।  আমাদের  ধর্মে  সবচেয়ে  গুরুত্বপূর্ণ  কাজ  হইল  আমরা  মহানবীর (সাঃ)  সম্মান  মর্যাদাকে  সর্বদা  রক্ষা  করিয়া  চলিব ।  আমার  মতে  ইসরাইলী  ইহুদীরা  ফিলিস্তীনি  মুসলমানদের  সাথে  যেই  ব্যবহার  করিয়াছে  তাহা  পৈশাচিক  এবং  নিন্দনীয় ।  কিন্তু  একই  ব্যবহার  যদি  ফিলিস্তীনি  মুসলমানেরা  ইসরাইলী  ইহুদীদের  প্রতি  করে,  তবে  তাহা  আরো  বেশী  পৈশাচিক ।  কেননা  ইহা  ইসলামের  (সুনামের)  ক্ষতি  করিয়া  থাকে ।  আইসিসের  লোকেরা  যখন  নিরীহ  সাধারণ  মানুষের  উপর  আক্রমণ  করে,  তখন  মানবজাতি  মনে  করিবে  আমাদের  নবীজির (সাঃ)  প্রচারিত  ধর্ম (ইসলাম)  একটি  নিষ্টুর  ধর্ম ।  উনবিংশ  শতাব্দির  একজন  মনীষি  আমির  আবদুল  কাদের  জাযায়েলী (রহঃ)  বলিয়াছেন,  যখন  অজ্ঞ  লোকেরা  মনে  করিবে  যে  ইসলাম  হইল  কঠোরতা,  বর্বরতা,  সীমালংঘন,  বাড়াবাড়ি  আর  অসংযমের  ধর্ম ;  তখন  বুঝিতে  হইবে  যে  এই  সত্য  ধর্মের  সত্যিকারের  অনুসারীর  সংখ্যা  খুবই  কমিয়া  গিয়াছে ।  আইসিসের  লোকগুলি  হইতেছে  খারেজী  অথচ  মিডিয়া  তাদের  প্রচার  করিতেছে  সুন্নী  হিসাবে ।  বলিতেছে  যে,  সুন্নীরা  শিয়াদের  হত্যা  করিতেছে ।  ইহারা  হইল  আহলে  ইবলীস (শয়তানের  দল) ।  একবার  হযরত  আবদুল্লাহ  ইবনে  ওমর  (রাঃ)  এর  নিকট  আসিয়া  এক  ব্যক্তি  বলিলেন,  আল্লাহ  কোরআনে  বলিয়াছেন,  লড়াই  কর  আল্লাহর  পথে  যতক্ষন  না  দুনিয়া  থেকে  ফেতনা-ফাসাদ  দূর  হয়ে  যায় । 
হযরত  আবদুল্লাহ  ইবনে  ওমর  (রাঃ)  বলিলেন,  তোমার  মাতা  তোমার  জন্য  বিলাপ  করুক !  তুমি  কি  জানো  ফিতনাহ (দাঙ্গা-হাঙ্গামা)  কি  জিনিস ?  আল্লাহর  রাসুল (সাঃ)  এবং  সাহাবায়ে  কেরাম  জিহাদ  করিয়াছেন  মুশরিকদের  বিরুদ্ধে ।  কেননা  তাহাদের  শিরকের  মধ্যে  থাকাটাই  হইল  সবচেয়ে  বড়  ফিতনাহ ।  (কেননা  মুশরিকরা  মানুষকে  ইসলাম  গ্রহন  করিতে  বাধা  দিত।)  আর  তোমাদের  লড়াই  আল্লাহর  পথে  নয়  বরং  ক্ষমতা  দখলের  লড়াই ।  বোখারী  শরীফের  হাদিস,  যখন  দুইজন  মুসলমান  হাতিয়ার  নিয়ে  লড়াই  শুরু  করে,  তাদের  জীবিত  এবং  মৃত  দুইজনই  জাহান্নামে  যাইবে ।  সহীহ  মুসলিমের  হাদিস  অনুযায়ী  ফিতনার  সময়ে  নিহত  ব্যক্তিদের  শহীদ  বলা  যাইবে না ।  বোখারীর  হাদীস  মতে,  মহানবী (সাঃ)  বলিয়াছেন,  দুষমনদের  মুখোমুখি  হওয়ার  আকাঙখা  করিও  না ।  রাসুলে  পাক  (সাঃ)  বলিয়াছেন,  শীঘ্রই  সমুদ্রের  টেউয়ের  মতো  ফিতনাহ  ফাসাদ  আছড়াইয়া  পড়িবে  একটার  পর  একটা ।  ফিতনাহ  যখন  প্রথম  প্রকাশ  পায়  তাহা  দেখিতে  হয়  সুন্দরী  নারীদের  মতো,  যাহা  সাধারণ  নির্বোধ  যুবকদেরকে  আকর্ষণ  করে ।  তারপর  তাহারা  যখন  ফেতনাহ  ফাসাদে  জড়াইয়া  যায়,  তখন  আর  তাহা  পলায়নের  পথ  থাকে  না ।  ধ্বংস  তাহাদেরকে  আলিঙন  করে ।  রাসুলুল্লাহ  (সাঃ)  বলিয়াছেন,  একদল  কমবয়সী  নির্বোধ  বালকদের  হাতে  আমার  উম্মত  ধ্বংস  হইবে । 
নবী  করীম (সাঃ)  একবার  খালিদ  ইবনে  ওলীদ (রাঃ)-এর  নেতৃত্বে  একটি  সেনাবাহিনী  প্রেরন  করেন ।  যুদ্ধে  অনেক  কাফের-মোশরেক  বন্দী  হইলে  খালীদ (রাঃ)  নির্দেশ  দিলেন,  যাহার  হাতে  যত  যুদ্ধবন্ধী  আছে  তাদের  সবাইকে  হত্যা  কর ।  কিন্তু  সাহাবায়ে  কেরাম  বন্দীদেরকে  হত্যা  করিতে  রাজি  হইলেন  না ।  খালিদ (রাঃ)  তাঁহার  নিজের  হাতে  যত  বন্দী  ছিল  তাদেরকে  হত্যা  করিলেন ।  এই  খবর  রাসুলুল্লাহ (সাঃ)  এর  নিকট  পৌঁছিলে  তিনি  সাথে  সাথে  কাবা  শরীফের  দিকে  মুখ  ঘুরাইয়া  বলিলেন,  হে  আল্লাহ !  খালিদ  যাহা  করিয়াছে  তাহার  সাথে  আমার  বিন্দুমাত্র  সম্পর্ক  নাই ।  আইসিস  বা  ইসলামিক  ষ্টেটের  লোকদের  ধর্মপরায়নতা  দেখিয়া  বিভ্রান্ত  হইবেন  না ।  কেননা  বিভ্রান্ত  বিপথগামী  পথভ্রষ্ট  এই  খারেজিদের  সম্পর্কে  নবীজি (সাঃ)  বলিয়া  গিয়াছেন  যে,  তাহাদের  নামায  দেখিলে  তোমরা  (সাহাবায়ে  কেরাম)  নিজেদের  নামাযকে  তুচ্ছ  মনে  করিবে ।  তাহারা  কোরআন  তেলাওয়াত  করিবে  কিন্তু  তাহা  তাহাদের  গলার  নীচে  নামিবে  না  অর্থাৎ  কুরআনের  মর্মার্থ  তাহারা  উপলব্ধি  করিতে  পারিবে  না ।  এই  বিভ্রান্ত  যুবকরা  আমার  উম্মাতকে  টুকরা  টুকরা  করিয়া  ফেলিবে ।  তাহারা  মুসলমানদের  হত্যা  করিবে  পক্ষান্তরে  কাফের  মোশরেকদের  ছাড়িয়া  দিবে।   মহানবী (সাঃ)  বলিয়াছেন,  ইসলাম  হইতে  তাহারা  এমনভাবে  বাহির  হইয়া  যাইবে,  তীর  যেভাবে  শিকার  ভেদ  করিয়া  চলিয়া  যায় ।  আমি  আমেরিকা  বা  ইজরাইলের  পক্ষে  সাফাই  গাহিতেছি  না।  এই  ফেতনার  সূচনাতে  তাহাদের  ভূমিকাই  প্রধান ।  কিন্তু  অন্যের  ঘাড়ে  দোষ  চাপানো  শয়তানের  কাজ ।  মানুষ  নিজের  দোষ  স্বীকার  করিয়া  আল্লাহর  নিকট  ক্ষমা  প্রার্থনা  করে ।  এই  জন্যই  মানুষ  আল্লাহর  খলিফা ।  পক্ষান্তরে  শয়তান  কখনও  নিজের  দোষ  স্বীকার  করে  না  বরং  নিজের  অপরাধ  অন্যের  ঘাড়ে  চাপিয়ে  দেয় ।  আল্লাহ  তায়ালা  কোরআনে  ইহুদীদের  সম্পর্কে  বলিয়াছেন,  যখনই  তাহারা  আমার  অবাধ্যতায়  লিপ্ত  হইয়াছে,  তখনই  আমি  তাহাদেরকে  শায়েস্তা  করিবার  জন্য  আমার  নির্মম  যোদ্ধা (রোমান/গ্রীক/পারসিক)  বান্দাদের  প্রেরণ  করিয়াছি,  যাহারা  তাহাদেরকে  হত্যা  করিয়াছে,  বাড়িঘর  ধ্বংস  করিয়াছে  এবং  দেশ  থেকে  নির্বাসিত  করিয়াছে (১৭:) ।  আমরা  এখন  চরম  মাত্রায়  আল্লাহর  নাফরমানীতে  লিপ্ত  রহিয়াছি  বলিয়াই  কাফের  এবং  জালেমদের  মাধ্যমে  আমাদেরকে  শায়েস্তা  করা  হইতেছে ।  কাজেই  অন্যের  ওপর  দোষ  না  চাপিয়ে  আগে  নিজেদের  দোষ  সংশোধন  করিতে  হইবে।  আমি  জানি  আপনাদের  দেশে (মালয়েশিয়ায়)  সরকারের  অনেক  সমস্যা  রহিয়াছে ।  এখানকার  প্রশাসন  আরো  অনেক  স্বচ্ছ  হওয়া  দরকার ।  আসলে  সমস্যা  কোথায়  নাই ?  সব  সরকারেরই  কিছু  না  কিছু  সমস্যা  রহিয়াছে ।  কিন্তু  মূল  কথা  হইল  একটি  পরিচ্ছন্ন  সরকার  পাইতে  চাহিলে  প্রথমে  আমাদের  নিজেদেরকে  পরিচ্ছন্ন  হইতে  হইবে ।  বিশ্বাস  করেন,  ইহার  কোন  বিকল্প  নাই ।  খারেজীদের  খেলাফত  ইসলামের  কোন  প্রয়োজন  নাই ।

ইউটিউবে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের চ্যানেলটি

Share This
Previous Post
Next Post

0 comments: