Monday, October 18, 2021

আয় রোজগারে বরকত চাইলে করণীয়

আয় রোজগারে বরকত চাইলে করণীয়
একদম সংক্ষেপে বললে সম্পদে বরকতের জন্য কয়েকটি করণীয় বিষয় মনে রাখতে পারেন- ১। আয়রোজগারের কাজ একদম সকাল-সকাল (ফজরের নামাজ যিকর শেষে) শুরু করা। ২। যা-ই আয় হোক, তার নির্দিষ্ট একটা অংশ নিয়মিত দান করা। (এটা তিনভাগের একভাগ হতে পারে, এমনকি একশভাগের ১% ও হতে পারে।) ৩। অশ্লীল গুনাহ থেকে বাঁচা। ৪। বেশি বেশি ইস্তেগফার করা। ৫৷ তাহাজ্জুদ পড়ে রিজিকে বরকতের দোয়া করা। ৬। রাতের বেলায় সুরা ওয়াকিয়া পড়া। (মাগরিব পর থেকে ঘুমের আগে, এরমধ্যে পড়লেই হবে।) ৭। প্রয়োজনে নিজে বদনজর বা অন্যান্য সমস্যার জন্য রুকইয়া করা। কর্মস্থলে / ব্যবসার যায়গায় রুকইয়ার পানি ছিটানো। ইত্যাদি ইত্যাদি। এছাড়া কাজের শক্তি-সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য রাতে ঘুমের জন্য বিছানায় গিয়ে তাসবিহে ফাতেমি (সুবহানাল্লাহ ৩৩বার, আলহামদুলিল্লাহ ৩৩বার, আল্লাহু-আকবার ৩৪বার) পড়ার অভ্যাস করতে পারেন।

Monday, July 19, 2021

কি কাজ করলে ফেরেশতাদের দু'আ পাবেন

কি কাজ করলে ফেরেশতাদের দু'আ পাবেন চলুন জেনে নিই। আসুন, এরকম (৫) টি সময়ের কথা জানি যখন আমরা ফেরেশতাদের দুআয় শামিল হতে পারব।

কি কাজ করলে ফেরেশতাদের দু'আ পাবেন

৫ সময়ে দোয়া করলে ফেরেসতাদের দোয়া পেতে পারেন

(১) দান সদকার সময়

দান সদকার সময় ফেরেশতাগণ দাতার জন্য দুআ করেন। নবীজি (সাঃ) বলেছেন, 

'প্রত্যহ সকালে বান্দা যখন উঠে, দুজন ফেরেশতা অবতীর্ণ হয়। একজন দুআ করে ও আল্লাহ, যে দান করে আপনি তাকে দান করুন", দ্বিতীয় জন বলে যে (দান হতে হাত) গুঁটিয়ে রাখে, তাকে ধ্বংস করুন।

[সহীহ মুসলিম-(২৩৮৩)]


(২) মসজিদে সালাতের পর কিছুক্ষণ বসা অবস্থায়।

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবীজি (সাঃ) বলেন, সালাত আদায়ের পর ব্যক্তি যতক্ষণ নিজ সালাতের স্থানে থাকে, ফেরেশতাগণ তার জন্য এ বলে দুআ করতে থাকেন ও আল্লাহ, আপনি তার ওপর রহমত বর্ষণ করুন এবং তার প্রতি অনুগ্রহ করুন।

[সহীহ বুখারী-(৬৪৭)]


(৩) মানুষকে উত্তম বিষয় শিক্ষা দেয়া

আবু উমামাহ আল-বাহিলি (রাযি.) হতে বর্ণিত; তিনি বলেন, নবীজির সামনে দুজন ব্যক্তির কথা বলা হলো, যাদের একজন আবেদ, আরেকজন আলেম। (তাদের মাঝে কে উত্তম?) নবীজি বললেন,তোমাদের সর্বশেষ জনের ওপর আমার যেমন শ্রেষ্ঠত্ব, আবেদের ওপর আলিমের অনুরূপ শ্রেষ্ঠত্ব।এরপর তিনি বললেন,আল্লাহ তাআলা, তাঁর ফেরেশতাগণ এবং আসমান ও জমিনের অধিবাসী থেকে শুরু করে, পিঁপড়া থেকে পাথর, (জলের) মাছেরা পর্যন্ত সেই ব্যক্তির জন্য দু'আ করে, যে শিক্ষক মানুষকে উত্তম বিষয় শেখায়।

[জামি আত-তিরমিযী-(২৬৮৫)]


(৪) অসুস্থকে দেখতে যাওয়া

অসুস্থকে দেখতে যাওয়া এবং আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে ভাইয়ের সাথে সাক্ষাৎ করার সময় ফেরেশতাগণ দুআ করেন। নবীজি বলেন,যে ব্যক্তি অসুস্থকে দেখতে যায়, কিংবা আল্লাহর জন্য ভাইয়ের সাথে সাক্ষাৎ করে, তখন একজন ঘোষণাকারী ঘোষণা করেন,তোমার মঙ্গল হোক, তোমার জীবন সুন্দর হোক, জান্নাতের একটি মনজিল তোমার হোক।

[তিরমিযী (২১৩৯)]


(৫) অন্যের জন্য দুআ করা

নবীজি (সাঃ) বলেন, একজন মুসলিম যখন তার ভাইয়ের অনুপস্থিতে দুআ করে, সেই দুআ কবুল করা হয়। সে সময় তার মাথার কাছে একজন ফেরেশতা অবস্থান করেন। ব্যক্তি যখন তার ভাইয়ের জন্য কল্যাণের দুআ করে ফেরেশতা বলেন আমিন তোমার জন্য ও অনুরুপ।

[মুসলিম (২৭৩৩)]

যেভাবে দোয়া করলে কবুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে

দোয়া করার সুযোগ পাওয়া নিঃসন্দেহে আল্লাহর এক অশেষ রহমত। আল্লাহ আমাদের সুযোগ দিয়েছেন নিজেদের চাওয়া গুলো আল্লাহর দরবারে পেশ করার। কিন্তু কোনোদিন কি আমরা নিজেদের দোয়ার ভাষা গুলো নিয়ে ভেবেছি?? আমার ক্ষুদ্র জ্ঞান থেকে আজকে দোয়া করার ধরন সম্পর্কে কিছুটা লিখছি।

দোয়া কবুল হওয়ার উপায়

আমরা যখন কোনো কিছুর জন্য আবেদন করে কোনো দরখাস্ত লিখি তখন অবশ্যই আমরা চেষ্টা করি নিজেদের চাওয়া টাকে সর্বাত্মকভাবে তুলে ধরতে। তখন দরখাস্ত টা অনুমোদন করার হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি থাকে। ঠিক তেমনি আল্লাহর কাছে যখন আমরা কোনো দোয়া করি তখন আমাদের এমনভাবে নিজেদের দোয়া পেশ করতে হবে যাতে সেই দোয়া কবুল হওয়া আমাদের জন্য কতটা জরুরি তা বলতে পারি। 

দোয়ার ক্ষেত্রে আমাদের এটাও দেখতে হবে যে আমরা কি চাচ্ছি আর কিভাবে চাচ্ছি। কারন দোয়া কবুলের জন্য সেটা অবশ্যই নেক উদ্দেশ্যে হতে হবে। আর দোয়া করলে আমাদের এই মাইন্ডসেট থাকতে হবে যে আমাদের দোয়া কবুল হবেই ইন শা আল্লাহ। 

আজকে আমাদের প্রত্যহ করা কিছু দোয়া আমরা সুন্দরভাবে যেভাবে আল্লাহর দরবারে পেশ করতে পারি তা আমি নিজের ধারণা থেকে বলছি। 

১.

❌ আল্লাহ অমুক ব্যাক্তিকে আমার জীবনসঙ্গী করে দিন।

✔ আল্লাহ যদি অমুক ব্যাক্তি আমার দুনিয়া ও আখিরাতের জন্য কল্যাণকর হয় তবেই তাকে আমার জীবনসঙ্গী করে দিন নতুবা তার থেকে আমার মন ঘুরিয়ে দিন। 

২.

❌ আল্লাহ আমাকে শীঘ্রই একটি চাকরি জুটিয়ে দিন।

✔ আল্লাহ আমাকে শীঘ্রই একটি হালাল আর সম্মানজনক চাকরি জুটিয়ে দিন।

৩.

❌ আল্লাহ আমাকে মৃত্যু দিন( এই দোয়া অনেকেই করেন কোনো কষ্টে পড়লে। এটা অবশ্যই অনুচিত।) 

✔ আল্লাহ আমাকে সবর করার তৌফিক দিন।  আমাকে নেক হায়াত দিন। আর আমার সব গুনাহ মাফ হওয়া ছাড়া আমাকে এই দুনিয়া থেকে উঠিয়ে নিয়েন না।

৪.

❌ আল্লাহ অমুক আমাকে কষ্ট দিয়েছে। তার উপর গজব নাজিল করুন।( অনেকেই এরকম চাইতে দেখেছি। এটাও খুবই অনুচিত)

✔আল্লাহ অমুককে হেদায়েত দিন। তাকে মন থেকে মাফ করে দেয়ার তৌফিক দিয়েন। আর আমি যদি তাকে কষ্ট দিয়ে থাকি তবে তাকে আমাকে মন থেকে মাফ করে দেয়ার তৌফিক দান করুন। এবং তার সাথে আমার সম্পর্ক পূর্বের চেয়ে ঘনিষ্ঠ করে দিন।

৫. 

❌আল্লাহ তাড়াতাড়ি আমার বিয়ের ব্যবস্থা করে দিন। 

✔ আল্লাহ আমাকে একজন দ্বীনদার আর নেককার জীবনসঙ্গী প্রদান করুন। এমন জীবনসঙ্গী দিন যে আমার চক্ষু শীতল করবে, আপনাকে ভালোবেসে আমাকে ভালোবাসবে, আমার ইলম অর্জনের সহযোগী হবে, আর যে আমার জান্নাতের সঙী হবে। (অন্যান্য বৈশিষ্ট্য যেমন সৌন্দর্য, বুদ্ধিমত্তা, বংশগত মর্যাদা ও নিজেদের মতো উল্লেখ করতে পারেন। তবে অবশ্যই আগে দ্বীনকে প্রাদান্য দিবেন।)

৬. 

❌আল্লাহ আমার জ্ঞান বাড়িয়ে দিন।

✔আল্লাহ আমাকে উপকারী জ্ঞান দান করুন। আমাকে পর্যাপ্ত ইলম দান করুন, ইলম অনুযায়ী আমল করার আর তা সবার কাছে পৌঁছে  দেয়ার তৌফিক দান করুন। 

৭. 

❌আল্লাহ আমাকে সন্তান দান করুন।

✔ আল্লাহ আমাকে নেককার সন্তান দান করুন। এমন সন্তান দান করুন যে দুনিয়া ও আখিরাতে আমার জন্য কল্যাণকর হবে।

৮.

❌ আল্লাহ আমি অমুক গুনাহ করে ফেলেছি।।আমাকে মাফ করুন।

✔ আল্লাহ আমি অমুক গুনাহ মাফ করুন। আর আমাকে এমনভাবে হেদায়েত দিন যাতে আমি পুনরায় এই গুনাহ না করি। সেই গুনাহ আর আমার মাঝে একটি দেয়াল করে দিন।

আরো অনেক দোয়াই লিখা যায় এরকম। আজকে কমন কয়টা নিয়ে লিখলাম। আর দোয়া করার সময় আল্লাহর গুনবাচক নামগুলো দিয়ে দোয়া করার চেষ্টা করবেন। যেমনঃ চাকরির জন্য চাওয়ার সময় আর- রজ্জাক( আল্লাহ রিযিকদাতা), ক্ষমা চাওয়ার সময় আল- গফফার (আল্লাহ ক্ষমাশীল)।  এভাবে দোয়া করলে কবুল হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়। আর অবশ্যই দোয়া কিংবা মুনাজাতের শুরুতে আল্লাহর প্রশংসা আদায় করবেন, তারপর নবীজী (স) এর উপর দুরুদ শরিফ পাঠ করবেন। দোয়া শেষ করার আগেও এই পদ্ধতি অনুসরণ করবেন। ইন শা আল্লাহ দোয়া কবুল হবেই। 

নিজের সীমিত জ্ঞান থেকে লিখেছি। ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। 

Sunday, July 4, 2021

বিপদ পড়ে আল্লাহর দিকে ফিরে আসতে লজ্জার কিছু নেই

বিপদ পড়ে আল্লাহর দিকে ফিরে আসতে লজ্জার কিছু নেই

বিপদ-আপদে পড়ে আল্লাহর দিকে ফিরে আসতে লজ্জা পাওয়ার কিছু নেই। আমরা বিভিন্ন সময় বিপদে পড়ি। তখন আমাদের মনে রাখতে হবে কিছু বিষয় চলুন জেনে নেয়া যাক।

❖ আল্লাহ্ তা‘আলা প্রধানত মানুষের উপর বিপদ-মুসিবত পাঠান দুটো কারণে। 

(১) গুনাহের শাস্তিস্বরূপ, যাতে তারা এই শাস্তির মাধ্যমে আল্লাহর দিকে ফিরে আসে।

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন, ‘‘মানুষের কৃতকর্মের দরুন স্থলে ও সমুদ্রে বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়ে; যার ফলে তাদেরকে তাদের কোনো কোনো (পাপ) কাজের শাস্তি তিনি আস্বাদন করান, যাতে তারা (আল্লাহর দিকে) ফিরে আসে।’’ [সুরা আর-রুম, আয়াত: ৪১]

(২) আল্লাহ্ তা‘আলা এই বিপদের মাধ্যমে মানুষের অনেক গুনাহ ক্ষমা করতে চান।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘‘আর, তোমাদের যে বিপদাপদ ঘটে, তা তো তোমাদের কৃতকর্মেরই ফল। তিনি তোমাদের অনেক অপরাধ ক্ষমা করে দেন।’’ [সুরা শুরা, আয়াত: ৩০]


❖ এমতাবস্থায় অধিকাংশ মানুষ কী করে?

আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘‘মানুষকে যখন দুঃখ-দুর্দশা স্পর্শ করে, তখন সে শুয়ে-বসে-দাঁড়িয়ে আমাকে ডাকতে থাকে। তারপর, আমি যখন তার দুঃখ-দুর্দশা দূর করে দিই, তখন সে এমনভাবে চলতে থাকে, যেন সে আপতিত দুঃখ-কষ্টের জন্য কখনোই আমাকে ডাকেনি।’’ [সুরা ইউনুস, আয়াত: ১২]

❖ বিপদে আল্লাহর দিকে ফিরে আসলে লজ্জার কিছু নেই; বরং প্রশংসনীয় ব্যাপার।

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন, ‘‘অতঃপর যখন তাদের কাছে আমার (পক্ষ হতে) শাস্তি আপতিত হলো, তখন তারা কেনো বিনীত হলো না?’’ [সুরা আন‘আম, আয়াত: ৪৩]

আল্লাহ্ নিজেই বলছেন, বিপদে পড়ার পর যাতে আমরা আল্লাহর কাছে কায়মনোবাক্যে দু‘আ-কান্নাকাটি করি, নিজ ভুলের স্বীকৃতি দিই। এটি আল্লাহ চান যে, মুসিবতে পড়লে আমরা তাঁর কাছে ফিরে যাই। অথচ, যখন কিছু মানুষ অসুস্থতায়, মৃত্যুভয়ে, বিপদ-মুসিবতে, ডিপ্রেশনে, রিলেশন ব্রেক-আপের কষ্টে, পারিবারিক ঝামেলায় বা অন্য কোনো বিপদে আল্লাহর দিকে ফিরে আসে, তাদের নিয়ে অনেতে ট্রল করা শুরু করেন! এমন নোংরা কাজের জন্য আল্লাহ কঠিনভাবে পাকড়াও করবেন। এমনকি পূর্বসূরি অনেক আলিম বলেছেন, কোনো মন্দ কাজ থেকে তাওবাহকারী ব্যক্তিকে যদি কেউ সেই কাজের জন্য লজ্জা দেয়, তবে সেই ব্যক্তির মৃত্যু ততদিন আসবে না, যতদিন না সে নিজেও এই কাজে জড়াবে। [তাফসিরে কুরতুবি]

এখন আপনি বলবেন, অনেকে তো শো-অফ করার জন্য বাহ্যত ধার্মিক সাজে। এরপর বিপদ কেটে গেলে আগের মতো হয়ে যায়। এ ব্যাপারে স্পষ্ট কথা হলো, কে কোন্ ইনটেনশন (নিয়ত) থেকে ধর্মে ফিরে আসেন, তার বিচার করার দায়িত্ব আল্লাহ আমার-আপনার উপর ন্যস্ত করেননি। মানুষের অন্তর ফেঁড়ে দেখাও আমাদের দায়িত্ব নয়। যিনি অন্তর্যামী, এই কাজটা তাঁরই। সুতরাং এতটা জাজমেন্টাল হবেন না। তাদের ফিরে আসাকে এপ্রিশিয়েট করুন, উৎসাহ দিন, তাদের জন্য দু‘আ করুন; নিজের হিদায়াতের জন্যও দু‘আ করুন। আমরা প্রত্যেকেই হিদায়াতের কাঙাল।

নিজ স্ত্রী ব্যাতিত অন্য কারো সাথে প্রেম করার পরিণাম

নিজ স্ত্রী ব্যাতিত অন্য কারো সাথে প্রেম করার পরিণাম

নিজ স্ত্রী ব্যাতিত অন্য কারো সাথে প্রেম করার পরিণাম কি হবে জেনে নিন। যে ব্যক্তি কোন মহিলাকে কুমতলবের ইচ্ছা নিয়ে স্পর্শ করবে, কিয়ামতের দিন সে এমনভাবে আসবে যে তার হাত তার ঘাড়ের সাথে যুক্ত থাকবে। সে যদি কোনো নারীকে চুমু দিয়ে থাকে, তাহলে তার ঠোঁট দুটিকে আগুনের কাঁচি দিয়ে কাটা হবে। আর যদি তার সাথে ব্যভিচারে লিপ্ত হয়ে থাকে তাহলে তার দুই উরু সাক্ষী দিবে, আমি অবৈধ কাজের জন্য আরোহণ করেছিলাম।

তখন আল্লাহ তার দিকে ক্রুদ্ধ দৃষ্টিতে তাকাবেন এবং এতে সে অপমান বোধ করে গোয়ার্তুমি করে বলবে ; আমি এ কাজ করিনি। তখন তার জিহ্বা তার বিরুদ্ধে সাক্ষী দিয়ে বলবে, ‘আমি অবৈধ বিষয়ে কথা বলেছিলাম’। তার হাত সাক্ষী দিবে, ‘আমি অবৈধ বস্তু ধরেছিলাম’। এরপর চক্ষু বলবে, ‘ আমি অবৈধ বস্তুর দিকে তাকাতাম’। তার দুখানা পা বলবে, ‘ আমি ব্যভিচার করেছি’। প্রহরী ফেরেশতারা বলবে, ‘ আমি শুনেছি’। অন্য ফেরেশতা বলবে, ‘আর আমি লিখে রেখেছি’। আর আল্লাহ বলবেন, ‘আমি জেনেছি এবং লুকিয়ে রেখেছি’। 

এরপর আল্লাহ বলবেন, ‘হে ফেরেশতাগণ! একে পাকড়াও করে আমার আযাব ভোগ করাও। কেননা যে ব্যক্তির লজ্জা কমে যায় তার উপর আমার ক্রোধের অন্ত নাই"" 

এ হাদীসের সমর্থন নিম্নের আয়াত দ্বারা প্রমাণিত হয়ঃ “যেদিন তাদের কৃতকর্মের বিরুদ্ধে তাদের জিহ্বা, তাদের হাত ও পা সাক্ষী দিবে”। [সূরা আন নূর-২৪]

অন্য আয়াতে আছে, ".. যারা ব্যভিচার (বিবাহ বহির্ভূত যৌনতা) করবে, তারা দ্বিগুণ শাস্তি ভোগ করবে, এবং অপমানিত অবস্থায় জাহান্নামে চিরস্থায়ী হবে.." (সূরা আল ফুরকান : ৬৮- ৬৯) 

“কেউ অণু পরিমাণ সৎকর্ম করলে তা দেখতে পাবে,এবং কেউ অণু পরিমাণ অসৎকর্ম করলে তাও দেখতে পাবে।” (সূরা যিলযালঃ৭-৮)

এসব হারাম সম্পর্কগুলো সৃষ্টি হয় দৃষ্টির মাধ্যমে। এজন্য হাদীসে দৃষ্টিকে শয়তানের তীর বলা হয়েছে। বেগানা নারীর সৌন্দর্য উপভোগ করাকে চোখের জিনা বলা হয়েছে। কোরআনে আল্লাহ তায়ালা নারী পুরুষ উভয়কেই দৃষ্টির হেফাজত করতে আদেশ করেছেন (সূরা নূর: আয়াত ৩০-৩১)। 

রাসূল্লাহ (স:) বলেছেন, "যে ব্যক্তি কোন বেগানা নারীর প্রতি লোলুপ দৃষ্টি নিক্ষেপ করবে , কিয়ামতের দিন তার চোখে উত্তপ্ত গলিত সীসা ঢেলে দেওয়া হবে॥" (ফাতহুল কাদীর)

আল্লাহর ভয়ে মেয়েদের সৌন্দর্য উপভোগ করা, কুদৃষ্টি ও কামনার দৃষ্টি  ত্যাগ করুন,আর অন্তরের মধ্য ইমানের মাধুরতা উপভোগ করুন।  এটা পরীক্ষিত সত্য। আল্লাহ আমাদের দৃষ্টির হেফাজত করার তৌফিক দান করুন। প্রেম, পরকীয়া সহ সব ধরণের হারাম কাজ থেকে বেঁচে থাকার তৌফিক দান করুন।

Thursday, April 22, 2021

হতাশ হয়োনা নিরাশ হয়োনা

হতাশ হয়োনা নিরাশ হয়োনা

প্রতি বছর একটা ছেলে গ্রীষ্মের ছুটিতে  বাবা মায়ের সাথে ট্রেনে করে নানা বাড়ি যায়। ছুটি শেষ হলে সেই ট্রেনে করে ফিরে আসে। এবারও গ্রীষ্মের ছুটি শুরু হয়েছে। এ বছর ছেলেটি  বাবা-মাকে বলে-আমি এখন অনেক বড়  হয়েছি। আমাকে এবার একাই নানাবাড়ি যেতে দাও।

অনেকে আলোচনার পর অবশেষে বাবা মা রাজি হন।  ছেলে ট্রেনে বসে আছে। বাবা মা জানালার পাশে দাঁড়িয়ে।  আদর দিচ্ছেন, সাহস দিচ্ছেন, অভয় দিচ্ছেন, দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন। ট্রেনে ছাড়ার হুইসেল বেজে গেছে।  ঠিক এমন মুহুর্তে বাবা ছেলের কানে কানে বলেন-যখনই তোমার মনে  কোনো ভয়, শংকা আসে তবে এটা তোমার জন্য। এটা তুমি  সযতনে রাখো।

ট্রেন চলতে শুরু করেছে। সাঁ সাঁ করে ছুটছে। সব কিছু মুহুর্তেই পেছনে পড়ে যাচ্ছে। জীবনে এই প্রথম ছেলেটি একেবারে একা। সবচেয়ে প্রিয়জন বাবা-মা কেউ  তার সাথে নেই। একেকটা নতুন স্টেশান আসে। কেউ নামে, কেউ ওঠে। কত রকমের ছুটোছুটি। নানা রকমের মানুষের নানা রকমের ব্যস্ততা। 

ছেলেটি এবার  খুব নিঃসঙ্গতা  অনুভব করতে থাকে। কেউ একজন এমনভাবে তার দিকে তাকায়- সে আরো বেশি ভয় পেয়ে যায়। ট্রেন যত ছুটছে- জানালার বাইরে যত অন্ধকার নেমে আসছে। তার একাকীত্ব আর ভয় দুটোও বাড়ছে। 

সে চুপচাপ বসে রইলো। বুঝতে পারছেনা কি করবে। ঠিক তখনই তার মনে হলো- বাবা তার পকেটে কি একটা রেখে বলেছিলেন- যদি মনে কোনো ভয় আসে। তখন সে যেন- তার পকেটে রাখা জিনিসটা দেখে।

কাঁপা কাঁপা হাতে সে পকেটে হাত রেখে  বুঝতে পারে পকেটে একটা ছোট কাগজ। সেখানে বাবার হাতে লেখাঃ

কোনো দুঃশ্চিন্তা করোনা, ভয় পেয়োনা। বাবা তোমার পাশেই আছেন। বাবা তোমার অতি নিকটে- তোমার পাশের  কম্পার্টমেন্টেই আছেন। 

এটাই মানবজীবন। 

যখনই কোনো ভয়,কোনো দুঃশ্চিন্তায় গ্রাস করে, কোনো শঙকা- কোনো দ্বিধায় মনকে বিচলিত করে, ঠিক  তখন সাহস আর ভরসা  পাওয়ার জন্য   রাব্বুল আলামীনও আমাদের কাছে একটা চিঠি ধরিয়ে দিয়ে অভয় দিয়েছেন।

 সেখানে লিখাঃ 

"লা তাহজান ইন্নাল্লাহা মা'আনা" (সুরা:আত-তাওবাহ আয়াত-৪০)

হতাশ হয়োনা। নিরাশ হয়োনা। ভয় পেয়োনা। তোমাদের রব তোমাদের সাথে আছেন। 

কোনো বিপদে , মুসিবতে  খুব একা হয়ে গেলে-  আল্লাহর উপর ভরসা রাখো।  তাকে ডাকো। তিনি তোমাদের খুব নিকটেই আছেন। তিনি  মানুষকে জীবন দিয়েছেন। এই জীবনের যাত্রাপথে  তিনি তোমাদের সাথেও  আছেন।

লিখেছেনঃ আরিফ মাহমুদ

Wednesday, September 30, 2020

টাখনু বা পায়ের গিঁটের নিচে কাপড় পরা

 (পুরুষদের জন্য) টাখনু বা পায়ের গিঁটের নিচে কাপড় পরা হারাম এবং কবীরা গোনাহ

লুঙ্গি, পাজামা, প্যান্ট অথবা যে কোন কাপড় টাখনু বা পায়ের গিঁটের নিচে পরা কবীরা গুনাহ্। চাই তা গর্ব করেই হোক অথবা এমনিতেই।

আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন: مَا أَسْفَلَ مِنَ الْكَعْبَيْنِ مِنَ الْإِزَارِ فَفِيْ النَّارِ. ‘‘লুঙ্গি, পাজামা বা প্যান্টের যে অংশটুকু পায়ের গিঁটের নিচে যাবে তা জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে’’। (বুখারী ৫৭৮৭)

যে ব্যক্তি টাখনু বা পায়ের গিঁটের নিচে কাপড় পরিধান করে আল্লাহ্ তা‘আলা কিয়ামতের দিন তার সাথে কোন কথা বলবেন না, তার দিকে তাকাবেনও না এমনকি তাকে গুনাহ্ থেকে পবিত্রও করবেন না উপরন্তু তার জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি।

টাখনু বা পায়ের গিঁটের নিচে কাপড় পরা


আবূ যর গিফারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন: ثَلَاثَةٌ لَا يُكَلِّمُهُمُ اللهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ، وَلَا يَنْظُرُ إِلَيْهِمْ، وَلَا يُزَكِّيْهِمْ، وَلَـهُمْ عَذَابٌ أَلِيْمٌ، قَالَ: فَقَرَأَهَا رَسُوْلُ اللهِ  ثَلَاثَ مِرَارٍ، قَالَ أَبُوْ ذَرٍّ: خَابُوْا وَخَسِرُوْا، مَنْ هُمْ يَا رَسُوْلَ اللهِ!؟ قَالَ: الْـمُسْبِلُ، وَالْـمَنَّانُ، وَفِيْ رِوَايَةٍ: الْـمَنَّانُ الَّذِيْ لَا يُعْطِيْ شَيْئًا إِلاَّ مَنَّهُ، وَالْـمُنْفِقُ سِلْعَتَهُ بِالْحَلِفِ الْكَاذِبِ. 

‘‘তিন ব্যক্তি এমন যে, আল্লাহ্ তা‘আলা কিয়ামতের দিন তাদের সাথে কথা বলবেন না, তাদের দিকে তাকাবেনও না এমনকি তাদেরকে গুনাহ্ থেকে পবিত্রও করবেন না উপরন্তু তাদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি। বর্ণনাকারী বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কথাগুলো তিন বার বলেছেন। আবূ যর (রাঃ) বলেন: তারা সত্যিই ব্যর্থ ও ক্ষতিগ্রস্ত। তবে তারা কারা হে আল্লাহ্’র রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: টাখনু বা পায়ের গিঁটের নিচে কাপড় পরিধানকারী, কাউকে কোন কিছু দিয়ে খোঁটা দানকারী এবং মিথ্যা কসম খেয়ে পণ্য সাপ্লাইকারী’’। (মুসলিম ১০৬; আবূ দাউদ ৪০৮৭, ৪০৮৮)


জাবির বিন্ সুলাইম (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে উদ্দেশ্য করে বললেন: وَارْفَعْ إِزَارَكَ إِلَى نِصْفِ السَّاقِ، فَإِنْ أَبَيْتَ فَإِلَى الْكَعْبَيْنِ، وَإِيَّاكَ وَإِسْبَالَ الْإِزَارِ فَإِنَّهَا مِنَ الْـمَخِيْلَةِ، وَإِنَّ اللهَ لَا يُحِبُّ الْـمَخِيْلَةَ. ‘‘তোমার নিম্ন বসন জঙ্ঘার অর্ধেকে উঠিয়ে নাও। তা না করলে অন্ততপক্ষে পায়ের গিঁট পর্যন্ত। তবে গিঁটের নিচে পরা থেকে অবশ্যই সতর্ক থাকবে। কারণ, তা অহঙ্কারের পরিচায়ক। আর আল্লাহ্ তা‘আলা অহঙ্কার করা পছন্দ করেন না’’। (আবূ দাউদ ৪০৮৪)

জামা এবং পাগড়িও গিঁটের নিচে যেতে পারবে না।


আব্দুল্লাহ্ বিন্ ’উমর (রাযিয়াল্লাহু আন্হুমা) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন: الْإِسْبَالُ فِيْ الْإِزَارِ وَالْقَمِيْصِ وَالْعِمَامَةِ، مَنْ جَرَّ مِنْهَا شَيْئًا خُيَلَاءَ لَمْ يَنْظُرِ اللهُ إِلَيْهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ. ‘‘গিঁটের নিচে পরা হারাম হওয়ার ব্যাপারটি লুঙ্গি, পাজামা, প্যান্ট, জামা, পাগড়ি ইত্যাদির মধ্যেও ধরা হয়। যে ব্যক্তি গর্ব করে এগুলোর কোনটি মাটিতে টেনে চলবে কিয়ামতের দিন আল্লাহ্ তা‘আলা তার প্রতি রহমতের দৃষ্টিতে তাকাবেন না’’। (আবূ দাউদ ৪০৯৪)

অসতর্কতাবশত প্যান্ট, লুঙ্গি বা পাজামা গিঁটের নিচে চলে গেলে স্মরণ হওয়া মাত্রই তা গিঁটের উপরে উঠিয়ে নিবেন। 

উৎস: “হারাম ও কবীরা গোনাহ” বই 

আল্লাহ সুবহানাহু আমাদের হারাম থেকে বাঁচার তাওফীক দিন।

ওমা তাওফীকি ইল্লা বিল্লাহ।

আল্লাহুম্মা আমিন।

Monday, September 28, 2020

ইসলামে ধর্ষকের শাস্তি কি?

ইসলামে ধর্ষকের শাস্তি কি?

 প্রশ্ন: ইসলামে ধর্ষকের শাস্তি কি?

উত্তর: কেউ যদি কোন নারীকে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে তাহলে তাতে দু ধরণের অপরাধ সংঘটিত হয়। সুতরাং তার শাস্তিও দু প্রকার।

⚫ একটি অপরাধ হল, জিনা বা ব্যভিচার। ইসলামী ফৌজদারি আইন অনুযায়ী এর শাস্তি হল, বিবাহিত হলে রজম তথা পাথর নিক্ষেপ করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা আর অবিবাহিত হলে একশ চাবুকাঘাত।

উল্লেখ্য যে, পারস্পারিক সম্মতিতে জিনা সংঘটিত হলেও ইসলামের এই কঠিন বিধান প্রয়োগ করা হবে। 

 ⚫ অপরটি হল, অপহরণ বা শক্তি প্রয়োগ। এটি ডাকাতি পর্যায়ের অপরাধ। এর শাস্তি নিম্নরূপ: আল্লাহ তাআলা বলেন-

 إِنَّمَا جَزَاءُ الَّذِينَ يُحَارِبُونَ اللَّـهَ وَرَسُولَهُ وَيَسْعَوْنَ فِي الْأَرْضِ فَسَادًا أَن يُقَتَّلُوا أَوْ يُصَلَّبُوا أَوْ تُقَطَّعَ أَيْدِيهِمْ وَأَرْجُلُهُم مِّنْ خِلَافٍ أَوْ يُنفَوْا مِنَ الْأَرْضِ ۚ 

“যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে এবং জমিনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চেষ্টা করে, তাদের শাস্তি হচ্ছে এই যে, তাদেরকে হত্যা করা হবে অথবা শূলীতে চড়ানো হবে অথবা তাদের হস্ত ও পদযুগল বিপরীত দিক থেকে (যেমন ডান হাত ও বাম পা অথবা বাম হাত ও ডান পা) কর্তন করা হবে অথবা দেশ থেকে বহিষ্কার করা হবে।” (সূরা মায়িদাহ: ৩৩)

শরিয়া কোর্টের বিচারকগণ সার্বিক দিক বিচার-বিশ্লেষণ করে যথাযথ সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে অপরাধীর উপর উপরোক্ত কুরআনের আইন বাস্তবায়ন করবেন।

🔸 উল্লেখ্য যে, ২য় আইনটির ক্ষেত্রে ব্যভিচার করা শর্ত নয়। অর্থাৎ কেউ যদি অস্ত্রের মুখে কোন নারীকে অপহরণ করে বা জোর পূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা চালায় তাহলে তার উপর  উক্ত আইন বাস্তবায়িত হবে; ধর্ষণ হোক বা না হোক। আর ধর্ষণ হলে তখন অপরাধ দুটি বলে গণ্য হবে এবং দুটিরই শাস্তি বাস্তবায়িত হবে। 

🔸 এ শাস্তি কেবল ধর্ষণকারীর উপর প্রয়োগ হবে; ধর্ষিতার উপর নয়। কেননা, ধর্ষিতা এখানে নিরপরাধ বরং সে জুলুমের শিকার হয়েছে। 

🔸 বিবাহিত ও অবিবাহিত নারী/পুরুষ জিনা করলে বিবাহিত ব্যক্তির উপর বিবাহিতের  জন্য যে দণ্ড তা প্রয়োগ হবে আর অবিবাহিত উপর অবিবাহিতের জন্য যে দণ্ড তা প্রয়োগ হবে।

আল্লাহু আলাম।


লেখাঃ শাইখ আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল (আল্লাহ্‌ তাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন!)

Tuesday, September 15, 2020

যে ব্যক্তি মানুষের শোকর আদায় করে না, সে আল্লাহর শোকরও করে না

রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন - "যে ব্যক্তি মানুষের শোকর আদায় করে না, সে আল্লাহর শোকরও করে না। " (তিরমিযী : ১৯৫৪)।

শোকর বা কৃতজ্ঞতা প্রকাশের বিভিন্ন শব্দ আমরা ব্যবহার করে থাকি, যা অধিকাংশই অনর্থক কিন্তু এমন একটি শব্দ রয়েছে যার দ্বারা কৃতজ্ঞতা আদায়ের সাথে দু'আ করাও হয়ে যায়। শব্দটি হলো জাযাকাল্লাহু খইরন। এটি একটি  ব্যাপক অর্থবোধক শব্দ। এর বেশ সুন্দর কয়েকটি অর্থ রয়েছে।

যে ব্যক্তি মানুষের শোকর আদায় করে না, সে আল্লাহর শোকরও করে না।


১। ﺧﻴﺮ ( খাইর) শব্দটি সে সমস্ত বিষয় বুঝায় যা আল্লাহর নিকট প্রিয়। তাই “খাইর” শব্দের মাধ্যমে আপনার জন্য সবরকমের কল্যাণ কামনা করা হল।


২। “জাযাকাল্লাহু খাইরান” অর্থঃ আল্লাহ আপনাকে জান্নাত এবং জান্নাতে তাঁর দিদার দ্বারা সৌভাগ্যবান করুন।


৩। “জাযাকাল্লাহু খাইরান” অর্থঃ আল্লাহ আপনাকে কাফিরদের স্থান জাহান্নাম থেকে হেফাজত করুন।


৪। “জাযাকাল্লাহু খাইরান” অর্থঃ আল্লাহ যেন আপনাকে সিরাতে মুস্তাক্বিম তথা সরল পথে পরিচালিত করেন।


৫। “জাযাকাল্লাহু খাইরান” অর্থঃ আল্লাহ যেন আপনার উপর কোন অভিশপ্ত শয়তানকে চাপিয়ে না দেন।


৬। “জাযাকাল্লাহু খাইরান” অর্থঃ আল্লাহ যেন আপনার রিজিকের মধ্যে বরকত দান করেন।


৭। “জাযাকাল্লাহু খাইরান” অর্থঃ শেষ দিবস পর্যন্ত আল্লাহ যেন আপনাকে মাতা-পিতার প্রতি সদ্ব্যবহারকারী করেন।


৮। “জাযাকাল্লাহু খাইরান” অর্থঃ আল্লাহ যেন আপনাকে রাসূলের সুন্নাতের অনুসারী করেন।


৯। “জাযাকাল্লাহু খাইরান” অর্থঃ আল্লাহ আপনাকে নেক সন্তান দান করুন।


১০। “জাযাকাল্লাহু খাইরান” আল্লাহ আপনাকে সবরকম কল্যাণ দান করুন।


এর আরো অসংখ্য অর্থ রয়েছে। কেননা খাইর ( ﺧﻴﺮ ) আল্লাহর নিকট অগুনিত। যা গণনা করা অসম্ভব। তবে আমরা বাক্যটির শাব্দিক অর্থ করি, “আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন” বলে।


ﻋﻦ ﺃﺳﺎﻣﺔ ﺑﻦ ﺯﻳﺪ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﻤﺎ ﻗﺎﻝ : ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : ( ﻣَﻦْ ﺻُﻨِﻊَ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﻣَﻌْﺮُﻭﻑٌ ﻓَﻘَﺎﻝَ ﻟِﻔَﺎﻋِﻠِﻪِ : ﺟَﺰَﺍﻙَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﺧَﻴْﺮًﺍ . ﻓَﻘَﺪْ ﺃَﺑْﻠَﻎَ ﻓِﻲ ﺍﻟﺜَّﻨَﺎﺀِ ) .

ﺭﻭﺍﻩ ” ﺍﻟﺘﺮﻣﺬﻱ ” ﻭﺍﻟﻨﺴﺎﺋﻲ ﻓﻲ ” ﺍﻟﺴﻨﻦ ﺍﻟﻜﺒﺮﻯ ”


অর্থঃ হযরত উসামা বিন যায়েদ (রাযি.) থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কারো প্রতি কৃতজ্ঞতার আচরণ করা হলো তাই সে ব্যক্তি আচরণকারীকে “জাযাকাল্লাহু খাইরান” বলল, তাহলে সে তার যথাযোগ্য প্রশংসা করল।



ﻋﻦ ﺃﺑﻲ ﻫﺮﻳﺮﺓ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﻗﺎﻝ : ﻗﺎﻝ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ” ﺇِﺫَﺍ ﻗَﺎﻝَ ﺍﻟﺮَّﺟُﻞُ ﻟِﺄَﺧِﻴﻪِ : ﺟَﺰَﺍﻙَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﺧَﻴْﺮًﺍ، ﻓَﻘَﺪْ ﺃَﺑْﻠَﻎَ ﻓِﻲ ﺍﻟﺜَّﻨَﺎﺀِ ”


অর্থঃ হযরত আবু হুরায়রা (রাযি.) বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়সাল্লাম বলেছেন, কেউ যখন তার ভাইকে বলে, “জাযাকাল্লাহু খাইরান” তাহলে সে তার ভূয়সী প্রশংসা করল।



ﻗﺎﻝ ﻋﻤﺮ ﺑﻦ ﺍﻟﺨﻄﺎﺏ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ : ﻟَﻮْ ﻳَﻌْﻠَﻢُ ﺃَﺣَﺪُﻛُﻢْ ﻣَﺎ ﻟَﻪُ ﻓِﻲ ﻗَﻮْﻟِﻪِ ﻟِﺄَﺧِﻴﻪِ : ﺟَﺰَﺍﻙَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﺧَﻴْﺮًﺍ، ﻟَﺄَﻛْﺜَﺮَ ﻣِﻨْﻬَﺎ ﺑَﻌْﻀُﻜُﻢْ ﻟِﺒَﻌْﺾٍ . ( ﺍﻟﻤﺼﻨﻒ ﻻﺑﻦ ﺃﺑﻲ ﺷﻴﺒﺔ )


হযরত ঊমর (রাযি.) বলেন, তোমাদের কারো যদি জানা থাকত যে, তার অপর ভাইকে “জাযাকাল্লাহু খাইরান” বলার মধ্যে তার জন্য কি রয়েছে!

তাহলে তোমরা একে অপরের জন্য তা বেশি করে বলতে।