Saturday, May 30, 2020

বিয়ে কি ক্যারিয়ার প্রতিষ্ঠার পথে বাঁধা?

বিশেষ করে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের মুখে 'ক্যারিয়ার প্রতিষ্ঠা করতে হবে' এই বাক্যটি বেশি শোনা যায়। এই ক্যারিয়ার প্রতিষ্ঠার আগ পর্যন্ত তারা দুনিয়ার আর কোন চিন্তা করতে পারেনা, বিয়ে সেখানে অনেক দূরের ব্যাপার। গ্রাজুয়েশন শেষ করে জবের জন্য পড়া, পড়া আর পড়া- এটিই হয়ে ওঠে তাদের জীবনের একমাত্র কাজ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে থাকার সময় দেখেছি শুধুমাত্র জবের পড়াশোনার জন্য সিনিয়ররা বাড়িতে ফিরতো না।
বিয়ে কি ক্যারিয়ার প্রতিষ্ঠার পথে বাঁধা

ঈদের পরে জবের পরীক্ষার দোহাই, বিয়ের বয়স শেষ হয়ে যাচ্ছে, গার্লফ্রেন্ডের বিয়ে হয়ে যাবে ইত্যাদি পেশারে দ্রত জব পাওয়ার জন্য বাবা মায়ের সাথে ঈদ কাটানো তাদের কাছে খুব অগুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে যেত।

সকল পেশারের মধ্যে ছেলেদের কাছে সবচেয়ে বড় পেশার গার্লফ্রেন্ডের বিয়ে হয়ে যাবে- এই চিন্তা।
এই চিন্তা আসলেই বড় চিন্তা। এই চিন্তা মাথায় আসলে ঠিকমতো নাওয়া-খাওয়া বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে পড়াশোনা কিভাবে সম্ভব? তারপরেও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রাজুয়েশন শেষ করা যুবককে এই চিন্তাটা বেশি করতে হয়। রিলাক্সে কোন কাজ করতে পারেনা। গার্লফ্রেন্ড কল করে বলে, বাবা ছেলে দেখেছে, আমি তো আর বিয়ে আটকাতে পারছিনা....!! যুবকের মাথা নষ্ট হয়ে যায়, সব বাদ দিয়ে জিএফকে কনভিন্স করা শুরু করে। জিএফের মা-বাকে জিএফের দিয়ে বিয়ে আটকানোর নানা অযুহাত শিখিয়ে দিতে থাকে... এভাবে সময় নষ্ট হতে থাকে বছরের পর বছর।

কিন্তু এই সময়টা যদি এই যুবক পেশারমুক্ত থাকতো, রিলাক্সে আরও মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করতে পারতো, তাহলে জব কি আরও দ্রুত সম্ভবপর হতো না?
বরং বউ পুরুষের জীবনে অন্যতম এক সঙ্গী, যে গার্লফ্রেন্ডের মত পেশার দেয়না বরং পড়াশোনা বেশি করার জন্য অনুপ্রেরণা দেয়। স্বামীর দ্রুত জবের জন্য ফজরের নামাজ পড়ে দোয়া করে। জব পাওয়া ও পড়াশোনার জন্য বউয়ের এই অনুপ্রেরণা ও দোয়া পাওয়ার ভাগ্য এই সমাজের ক'জন যুবকের হয়?

এখন আসি আপুদের বিষয়ে। আমাদের আপুদের অধিকাংশের চিন্তাভাবনা যে বিয়ে করলে এই বুঝি ক্যারিয়ার শেষ। কিন্তু আসলেই কি তাই? বিয়ের পরেও ক্যারিয়ার গঠন করেছে এমন অসংখ্য মেয়ে সমাজে আছে। স্বামীর অনুপ্রেরণায় এগিয়ে গেছে বহুদূর। বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজে স্বামী বাইকে করে পৌঁছে দিয়ে যাবে, ক্লাস শেষে বউকে বাড়িতে নেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজ গেটে স্বামী দাঁড়িয়ে থাকবে। এই ভালবাসা আমাদের আপুরা হয়তো বোঝেনা। আমি আমার এমন কয়েকজন বান্ধবীর স্বামীকে দেখেছি বউকে নিয়ে যাওয়ার জন্য ঘন্টা পর ঘন্টা কলেজ গেটে অপেক্ষা করতে। এটি নির্ভেজাল ভালবাসা। আর এই ভালবাসা শুধুমাত্র বিয়ের করার মাধ্যমেই পাওয়া সম্ভব।

বিয়ে কখনো ক্যারিয়ারের জন্য বাধা হতে পারেনা। বরং বিয়ের পরেও সংসার স্বামী সন্তান সামলিয়ে নিজের ক্যারিয়ার গড়াও গৌরব ও চ্যালেঞ্জিংয়ের বিষয়।

◼ লিখছেন : মুহাম্মাদ রাশেদ খাঁন

বিয়ে পূর্ব প্রেম-ভালোবাসা হারাম। নিজে বিয়ে করুন। বন্ধুদেরকে বিয়ে করাতে উৎসাহিত করুন।

ইউটিউবে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের চ্যানেলটি

Share This
Previous Post
Next Post

0 comments: