Sunday, November 1, 2015

ইমাম আলী আঃ ও মা ফাতিমা আঃ এর বিবাহ

প্রশ্ন:
আমিরুল মুমিনিন হযরত আলী (আঃ) ছিলেন বিশ্বনবী (সাঃ) এর আপন চাচাত ভাই, তাই আলী (আঃ) এর সঙ্গে ফাতিমা (সাঃ আঃ) এর বিয়ে ছিল দূর-সম্পর্কের চাচার সঙ্গে বিয়ে । এ ব্যাপারে আল্লাহর অনুমতি ছিল কিনা ? এ ধরনের বিয়ের কারণ কী এবং এখনও এ ধরনের বিয়ে কী বৈধ ?

উত্তর:-
এ ধরনের বিয়ের বৈধতার ব্যাপারে বিন্দুমাত্র সন্দেহের অবকাশ নেই । কারণ, তা না হলে বিশ্বনবী (সাঃ) নিজ কন্যার জন্য এ ধরনের বিয়ের অনুমতি দিতেন না । আর হ্যাঁ , অনেক বিশিষ্ট সাহাবিও হযরত ফাতিমা (সাঃআঃ) কে বিয়ের জন্য রাসূল (সাঃ) এর কাছে প্রস্তাব দিয়েছিলেন । কিন্ত রাসূল (সাঃ) সেইসব প্রস্তাব নাকচ করেছিলেন এবং ফাতিমা (সাঃআঃ) এর সম্ভাব্য স্বামী কে হবেন সেটা স্বয়ং আল্লাহই নির্ধারণ করবেন বলে জানিয়েছিলেন বলে বর্ণনায় এসেছে ।

তাই এটা সুস্পষ্ট যে , হযরত আলী (আঃ) ও ফাতিমা (সালামুল্লাহি আলাইহার) বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া ছিল মহান আল্লাহরই সরাসরি নির্দেশ । ইসলামী বর্ণনা বা হাদিস অনুযায়ী , হযরত ফাতিমা (সাঃ আঃ) হলেন সব যুগের নারী জাতির মধ্যে শ্রেষ্ঠ এবং বেহেশতি নারীদের নেত্রী । তাই বিবেকই বলে যে , তাঁর স্বামীকেও হতে হবে রাসূলে খোদার পর উম্মতের মধ্যে সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি । অন্য কথায় আলী (আঃ) না থাকলে ফাতিমা (সাঃআঃ) কে চিরকুমারী থাকতে হত ।

পিতার আপন ভাই না হলে তার দূর-সম্পর্কের ভাই , যেমন , চাচাত , ফুপাত , খালাত বা মামাত ভাইদের জন্য ওই ভাইদের মেয়েকে বিয়ে করা সব যুগেই বৈধ , বরং সুন্নাত তথা মুস্তাহাব ।

এ ধরনের বিয়েকে খারাপ দৃষ্টিতে দেখা বা এ ব্যাপারে বর্তমান যুগে মুসলমানদের কোনো কোনো অঞ্চলে কোনো অনীহা বা আপত্তি থাকার বিষয়টি এক ধরনের কুসংস্কার মাত্র ।

পবিত্র কুরআনে স্পষ্টভাবে বলে দেয়া হয়েছে , কাদের সঙ্গে বিয়ে বৈধ ও কাদের সঙ্গে বিয়ে অবৈধ - সূরা নিসার ২২ থেকে ২৪ নম্বর আয়াত দ্রষ্টব্য

তাই ফাতিমা (সাঃআঃ) ও আলী (আঃ) এর বিয়েকে কোনো ব্যতিক্রমী ঘটনা মনে করাও ঠিক নয় ।

সুরা নিসার ২২ থেকে ২৪ নম্বর আয়াত --
২২। অতীতে যা ঘটেছে তা ব্যতীত, [এখন থেকে] তোমাদের পিতাদের বিবাহিত নারীদের তোমরা বিবাহ করো না। নিশ্চয়ই ইহা লজ্জাজনক ও ঘৃণ্য এবং জঘন্য এক প্রথা।

২৩। তোমাদের [জন্য বিবাহে] নিষিদ্ধ করা হয়েছে, তোমাদের মাতা, কন্যা, ভগ্নী, ফুপু, খালা, ভ্রাতুষ্পুত্রী, বোনের মেয়ে, দুগ্ধ মাতা, দুগ্ধ-বোন, শ্বাশুরী, তোমাদের স্ত্রীদের মধ্যে যার সাথে সংগত হয়েছ তার পূর্ব স্বামীর ঔরসে তার গর্ভজাত সৎ কন্যা যারা তোমাদের অভিভাবকত্বে আছে। তবে যদি তাদের সাথে সংগত না হয়ে থাক, তাতে তোমাদের কোন অপরাধ নাই। এবং তোমাদের জন্য নিষিদ্ধ তোমাদের ঔরসজাত পুত্রের স্ত্রী এবং একই সময়ে দুই ভগ্নীকে বিবাহ করা। অতীতে যা ঘটেছে তা ব্যতীত। নিশ্চয়ই আল্লাহ্‌ ক্ষমাশীল পরম দয়ালু।

২৪। তোমাদের অধিকারভুক্ত দাসী ব্যতীত আরও [নিষিদ্ধ করা হয়েছে] সকল বিবাহিত নারী। এভাবেই আল্লাহ্‌ [নিষেধ সমূহের] বিধান স্থাপন করেছেন। উল্লেখিত নারীগণ ব্যতীত অন্য নারীকে তোমাদের সম্পত্তি থেকে উপহার দান করে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া বৈধ করা হলো - [যা] ব্যভিচারের জন্য নয় [বরং চরিত্রের] পবিত্রতার জন্য। তাদের মাধ্যমে যে সুখ ও আনন্দ তোমরা ভোগ করেছ তার দরুণ তাদের মোহর পরিশোধ করা কর্তব্য। মোহর নির্ধারণের পরে, কোন বিষয়ে [পরিবর্তনের জন্য] পরস্পর রাযী হলে তাতে তোমাদের কোন দোষ নাই। এবং আল্লাহ্‌ সব জানেন এবং সর্ব বিষয়ে প্রজ্ঞাময় ।
(লেখাটি সংগৃহীত)

ইউটিউবে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের চ্যানেলটি

Share This
Previous Post
Next Post

0 comments: