কর্মজীবন : ১১ রজব ১৩৭৩ হিজরি মোতাবেক ১৬ মার্চ ১৯৫৪ ইং তারিখে রিয়াদের ভারপ্রাপ্ত আমির হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। ২৫ শা’বান ১৩৭৪ হিজরি মোতাবেক ১৮ এপ্রিল ১৯৫৫ ইং তারিখে মন্ত্রীর মর্যাদায় রিয়াদের আমির নিযুক্ত হন। তিনি এ পদে ২০১১ সাল পর্যন্ত বহাল থাকেন। তাঁর সময়ে তিনি রিয়াদকে মধ্যম সাইজের শহর থেকে বিশাল বড় পৌরসভায় রূপান্তরিত করেন। বলা হয় রিয়াদ প্রদেশে তাঁর প্রশাসন ছিল সম্পূর্ণ দুর্নীতিমুক্ত। ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে তিনি রিয়াদের সব ভিুকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ প্রদান করেন। সব বিদেশী ভিুক ফেরত পাঠানো হয় এবং সউদী ভিুকদের সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় কর্তৃক পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় আনা হয়।
১৯৫৬ সাল থেকে তিনি কয়েকটি স্থানীয় কমিটি ও সমিতির নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। তিনি আরব ও ইসলামি বিশ্বের দরিদ্র ও ঝড়-ভূমিকম্পে আক্রান্ত জনগোষ্ঠীর সাহায্যের জন্য দানদাক্ষিণ্য সংগ্রহ করেন। তিনি রিয়াদ উন্নয়নের সর্বোচ্চ পরিষদের চেয়ারম্যান, দিরাইয়া উন্নয়নের কার্যকরী পরিষদের প্রধান, মক্কা-মদিনার ইতিহাস কেন্দ্রের পরিচালনা কমিটির প্রধান, বাদশাহ ফাহাদ জাতীয় গ্রন্থাগারের প্রধান তত্ত্বাবধায়ক, বাদশাহ আবদুল আযীযের প্রাসাদ পরিচালনা কমিটির প্রধান, বাদশাহ আবদুল আযীয ইসলামি সংস্থার সাধারণ সম্পাদক। ৫ শাওয়াল ১৪১৯ হিজরী তারিখে সউদী আরবের প্রতিষ্ঠার ১০০ বছর পূর্তি উদযাপন উপলক্ষে গঠিত সর্বোচ্চ পরিষদ কমিটির প্রধানসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সেবামূলক সংস্থাসমূহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
পদক ও ডিগ্রিলাভ : ২০১০ সালের জানুয়ারি মাসে ইসলামি অবদানের জন্য বসনীয় পদক লাভ করেন। বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার মুসলমানদের জন্য তিনি যে অবদান রাখেন সে জন্য তাকে এ পদক প্রদান করা হয়। উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদের দেশগুলোতে মানবকল্যাণে কাজ করার স্বীকৃতিস্বরূপ ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বাহরাইন পুরস্কার লাভ করেন।
২০১০ সালে তিনি সউদী আরবে তথ্য ও বিজ্ঞান বিপ্লবের জন্য ‘ম্যান অব দি ইয়ার’ বর্ষসেরা পদক লাভ করেন। ২০১০ সালে ভারত সফরের সময় জামিআ মিল্লিয়া, দিল্লি-মানবকল্যাণে ও শিক্ষা খাতে সহায়তা করার জন্য তাকে অনারারি ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করা হয়। সাহিত্য ক্ষেত্রে তাঁর অবদানের মূল্যায়ন ও স্বীকৃতিস্বরূপ মক্কার উম্মুল কুরা বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে ২০০৮ সালে অনাররিী ডি লিট ডিগ্রি প্রদান করে। সউদী আরবের ইতিহাস সংরক্ষণ ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাঁর অবদান রাখার জন্য মদিনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ২০১১ সালে তাঁকে অনারারি ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করে।
বিজ্ঞানে বিশেষ অবদান রাখার জন্য ২০১০ সালে জার্মানে তাঁর সরকারি সফরকালে বার্লিন একাডেমি তাঁকে ‘কান্ট’ পদক প্রদান করেন। তিনি ২০০৯ সালের ডিসেম্বর মাসে উত্তর আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের অঞ্চলের আন্তর্জাতিক বিশেষ অলিম্পিক পুরস্কার লাভ করেন।
তিনি ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সুইজারল্যান্ডের ১৬তম প্রেসিডেন্ট কার্ল জোমতাফের পক্ষ থেকে বাদন বাউল স্কাউট ফেলোশিপ লাভ করেন। বিশ্বের দারিদ্র্য বিমোচনে অবদান রাখার জন্য তিনি ১৯৯৭ সালে জাতিসংঘের পদক লাভ করেন। ১৯৯১ সালে বাংলাদেশে বন্যায় আক্রান্তদের সাহায্য-সহযোগিতার জন্য অনুদান সংগ্রহের স্থানীয় সংস্থার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি সাবেক যুবরাজ নায়েফ বিন আবদুল আযীযের মৃত্যুর পর বিগত ১৮ জুন ২০১২ ইং তারিখে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন। তিনি প্যারিস শহরের ২০০০ বছর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন পদক পান। ১৯৮৫ সালে প্রেসিডেন্ট জ্যাক শিরাক তাঁকে এ পদক পরিয়ে দেন।
১৯৯৯ সালে তিনি ফিলিপিনের সর্বোচ্চ পদক (স্কোটনা) প্রাপ্ত হন। ১৯৯৮ সালে তিনি আল কুদস স্টার পদক লাভ করেন। ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট ইয়াসির আরাফাত রিয়াদের রয়াল প্যালেসে অনুষ্ঠিত এক অনুষ্ঠানে তাঁকে এ পদকে ভূষিত করেন। ফিলিস্তিন জাতির সেবায় যে বীরত্ব, ত্যাগ ও অনন্য অবদান রেখেছেন তার মূল্যায়ন করেই তাঁকে এ পদকে ভূষিত করা হয়। বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার স্বাধীনতালাভে তাঁর প্রচেষ্টা ও সাহায্যের জন্য বসনিয়া-হার্জেগোভিনা স্বর্ণপদক লাভ করেন। বসনিয়ার প্রেসিডেন্ট আলী ইযযত বেগুফিশ ১৯৯৭ সালের মার্চ মাসে রিয়াদে তাঁকে এ পদকে ভূষিত করেন। তিনি চিন্তার যোগ্যতা পদকে ভূষিত হন।
৫ নভেম্বর ২০১১ তারিখে বাদশাহ সালমানকে তাঁর সহোদর ভাই মৃত সুলতান বিন আবদুল আযীযের স্থলাভিষিক্ত করে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ প্রদান করা হয়। তাঁকে জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের সদস্য হিসেবেও ঘোষণা করা হয়। তাঁর ভাই যুবরাজ নায়েফ বিন আবদুল আযীযের মৃত্যুর পর ১৮ জুন ২০১২ তারিখে তাঁকে সউদী আরবের যুবরাজ হিসেবে নিয়োগ প্রদান করা হয়। তাঁকে ডিপুটি প্রাইম মিনিস্টারও করা হয়। ৩ রবিউস সানি ১৪৩৬ হিজরি মোতাবেক ২৩ জানুয়ারি ২০১৫ খাদেমুল হারামাইন বাদশাহ আবদুল্লাহর মৃত্যুর পর বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজকে সউদী আরবের ৭ম বাদশাহ হিসেবে ঘোষণা করা হয় তিনি ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ তারিখে টুইটার অ্যাকাউন্ট খোলেন। বাদশাহ সালমান এবং তাঁর পরিবারের মালিকানায় রয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদপত্র ‘আল শার্ক আল আসওয়াত’ এবং সউদী দৈনিক সংবাদপত্র ‘আল ইকতে ছাদিয়া’।
ইউটিউবে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের চ্যানেলটি
0 comments: