Wednesday, August 26, 2015

রাসুলের(সাঃ) ছিনা চাক/ বক্ষ প্রশস্ত হওয়া সম্পর্কে

রাসুলের(সাঃ) ছিনা চাক/ বক্ষ প্রশস্ত হওয়া সম্পর্কে
সুরা ইনশিরাহ,আয়াত# ১-৮
মুলঃমাওলানা ফরমান আলীর উর্দু তাফসীর
অনুবাদঃ মাওলানা শেখ সাবের রেজা
সম্পাদনা ও পুনর্লিখনঃ হুজ্জাতুল ইসলাম মোঃ আনোয়ারুল কবির আরিফ(ষ্টুডেন্ট অফ পি এইচ ডি,ইরান)
প্রকাশকঃঈমান ফাউন্ডেশনের পক্ষে,নুরুস সাকলায়েন জনকল্যান সংস্থা,বেগম বাজার,ঢাকা।
“ আমরা কি তোমার জন্য তোমার বক্ষ প্রশস্ত করিনি(১)? এবং তোমার থেকে তোমার ভার অপসারন করিনি?যা তোমার পৃষ্টকে ভেঙ্গে ফেলছিল; এবং আমরা তোমার স্মরনকে উন্নীত করেছি।সুতরাং নিশ্চয়ই কষ্টের সাথে স্বস্তি আছে, নিশ্চয়ই কষ্টের সাথে স্বস্তি আছে।সুতরাং যখন অবসর পাও (নবুওতের দায়িত্ব সম্পন্ন কর) তখন ( স্থলাভিষিক্ত মনোনয়নের) কঠোর প্রচেষ্টায় রত হও(২)।এবং তোমার প্রতিপালকের প্রতি মনোনিবেশ কর।
ব্যাখ্যাঃ এ সুরায় প্রথমত আল্লাহ রাসুলের(সাঃ) বক্ষ জ্ঞানে পরিপুর্ন হওয়ার কথা উল্লেখ করেছেন।(তা সত্ত্বেও তাফসীরকারকগন এ কথা বলে থাকেন যে, ফেরেস্তা রাসুলের(সাঃ) বক্ষ বিদারন (ছিনা চাক) করেছেন এবং তাঁর অন্তর ধৌত করেছেন ।এটা বিবেক-বুদ্বির সম্পুর্ন বিপরীত ও অযৌক্তিক কথা।কারন বক্ষ ধৌত করার মাধ্যমে কখনো আত্নিক পরিশুদ্বতা অর্জিত হয় না)।দ্বিতীয়ত আল্লাহ তাঁর প্রতি এ অনুগ্রহ করেছেন যে, পবিত্র কোরান ব্যাখ্যা ও ঐশী বিধিবিধান পৌছানো এবং তা বাস্তবায়িত করার যে গুরুদায়িত্ব তাঁর কাঁধে ছিল তা হযরত আলীর(আঃ) খেলাফত ও প্রতিনিধিত্বের মাধ্যমে লাঘব করে দিয়েছেন।আর যেহেতু এ আদেশ অর্থাৎ আলীর(আঃ) খেলাফতের ঘোষনাকে তিনি খুব কঠিন কর্ম গন্য করেছিলেন সে কারনে আল্লাহ যেরুপে অন্য স্থানে অন্য বাক্যে বিষয়টির প্রতি ইঙ্গিত করেছেন। অনুরুপ এস্থলেও এভাবে বলেছেন যে, যখন অবসর পাও অর্থাৎ যখন তুমি বিদায় হজ্ব পালন করে নবুওতের দায়িত্ব সম্পন্ন করে নেবে তখন আলীকে খলিফা নিযুক্ত করার কঠিন প্রচেষ্টায় রত হও।অতপর আল্লাহর দিকে মনোনিবেশ করবে।অর্থাত ইন্তেকালের প্রস্তুতি নেবে।যদিও সুন্নী তাফসীরকারকগন এরুপ ব্যাখ্যা করেননি, তবুও বিবেকবান ও ন্যায়পরায়ন ব্যক্তিগন আল্লাহর কামনাকে যদি মনোযোগ সহকারে অধ্যয়ন করেন এবং এই ব্যাখ্যা ও সুন্নীদের ব্যাখ্যাকে কোরানের বাক্যের সঙ্গে তুলনা করেন বা মিলিয়ে দেখেন তাহলে জানতে পারবেন যে, কোনটি সঠিক।আল্লাহই সর্বজ্ঞ।

২) আলুসী তাঁর ‘রুহুল মায়ানী’ গ্রন্থে জামাখশারীর ‘তাফসীরে কাশশাফ’ গ্রন্থের সুত্রে বলেছেন, যদি শিয়ারা আলোচ্য আয়াতের ‘ফানসাব’ শব্দটিকে ‘ফানসিব’ (নিযুক্ত কর) অর্থে গ্রহন করে এটাকে হযরত আলীর স্থলাভিষিক্ত হওয়ার স্বপক্ষে দলীল হিসাবে গ্রহন করে তবে হযরত আলীর শত্রুরা(নাসেবীরা) ‘ফানসাব’ শব্দটিকে নিজেদের মনগড়া ব্যাখ্যা করে হযরত আলীর বিদ্বেষের স্বপক্ষে দলীল হিসাবে করলে আপত্তি করা যাবে না।একথার মধ্যে জামাখশারী অনেক বড় ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন যে, শিয়াদের বিরোধিতা করতে গিয়ে তিনি হযরত আলীর অবমাননা করেছেন। তিনি কি গাদীরের হাদিসসহ হযরত আলীর মনোনয়নের স্বপক্ষে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের সুত্রে হাদিস সমুহ দেখেননি? তদুপরি এ আয়াতের শানে নুযুলে আমাদের উল্লেখিত ব্যাখ্যার সমর্থনে আবুল কাসেম হাসকানীর শাওয়াহেদুত তানজিল(২য় খন্ড,পাতা-৩৪৯) গ্রন্থে বেশ কিছু রেওয়ায়েত( হাদিস# ১১১৬-১১১৯) বর্নিত হয়েছে।আর আলোচ্য বিষয়টি প্রমানের জন্য ‘ফানসাব’ শব্দটিকে ‘ফানসিব’ অর্থে গ্রহন করার কোন দরকার নেই।

ইউটিউবে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের চ্যানেলটি

Share This
Previous Post
Next Post

0 comments: